ট্রাকে ট্রাকে ছুটছে সুন্নী জনতা। চোখে-মুখে তাদের উচ্ছ্বাস। গাড়িতে বেজে চলেছে হামদ-নাত। ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর’, ‘নারায়ে রেসালত, ইয়া রাসুলুল্লাহ’ ধ্বনিতে মুখরিত গোটা শহর। হাতে হাতে পতাকা। এ পতাকা যেন মহানবী (স.) জন্মদিনের বার্তা।
সুন্নী জনতার কাছে ঈদের পরেই নবীর আগমনী এই দিনটির স্থান। তাই উৎসব-অানন্দে মেতে থাকতে চট্টগ্রামজুড়ে জশনে জুলুস উদযাপন করেছে তারা।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকাল সোয়া ৮টার দিকে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামের বিবিরহাট থেকে এ জুলুস (র্যালি) শুরু হয়। হাজারো ট্রাকে চড়ে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয় এই জুলুসে। সোয়া ৯টার দিকে ওয়াসা মোড় থেকে জুলুসটি ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে ফিরে আসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জুলুসে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মুখে ছিল মাস্ক। ট্রাকে ট্রাকে অংশ নিলেও স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় নিয়ে জনসমাগম ছিল না অতীতের জুলুসের মত। আবার আগত ব্যক্তিদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সরবরাহ করতে দেখা গেছে পানীয়, ফলমূল। জুলুসে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের হাতে দেওয়া হয় স্যানিটাইজার। বিতরণ করা হয় মাস্কও।
এবারের জুলুসে নেতৃত্ব দেন আনজুমানের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি অছিউর রহমান আল কাদেরী প্রমুখ।
জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রামে বলুয়ারদিঘী খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্ব প্রথম জুলুসটি বের করে আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া। ওই জুলুসে নেতৃত্ব দেন আঞ্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুর মোহাম্মদ আল কাদেরি। এরপর ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এ জুলুসে নেতৃত্ব দেন সৈয়দ মোহাম্মদ তৈয়ব শাহ (রা.)।
মূলত ১৯৭৬ সালের পর থেকেই ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ১২ রবিউল আওয়াল চট্টগ্রামে এ জুলুসের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। যা ক্রমান্বয়ে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, দরবার, সংগঠন ও সংস্থাগুলোও আয়োজন করতে শুরু করে। ১৯৮৬ সালের পর থেকে আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ এ জুলুসে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এমএফও