চকবাজারে ‘লোক দেখানো’ অভিযান, উচ্ছেদের পর ফের দখল রাস্তা

চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারে ‘লোক দেখানো’ অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করে চলে গেছে সিটি কর্পোরেশনের স্ট্রাইকিং ফোর্স। এনিয়ে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

সোমবার (২১ আগস্ট) বেলা পৌনে ১টার দিকে দেখা গেছে এমন চিত্র।

জানা গেছে, বেলা পৌনে ১টার দিকে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম স্ট্রাইকিং ফোর্স ও পুলিশসহ চকবাজার কাঁচাবাজার হয়ে পশ্চিম বাকলিয়া এলাকার কৃষ্ণ মন্দির সংলগ্ন চাক্তাই ডাইভরশন খাল পরিদর্শনে যান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুও। অথচ যাওয়ার পথে রাস্তা ও ফুটপাতে দখল করে থাকা প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনার একটিও উচ্ছেদ করা হয়নি।

পরে খাল পরিদর্শন শেষে মো. আবুল হাশেম চলে আসেন চকবাজার কাঁচাবাজারের সামনে। সেখান দাঁড়িয়ে রাস্তার অপরপাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি ভ্যানগাড়ি সরিয়ে দিতে বললে স্টাইকিং ফোর্সের সদস্যরা এসে দ্রুত সরিয়ে দেয়।

এরপর দুপুর ১টার দিকে মেয়রের গাড়ি কে বি আমান আলী রোড হয়ে এসে দাঁড়ায় কাঁচাবাজারের সামনে। এসময় দ্রুত গাড়িতে উঠে পড়েন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম। খবর পেয়ে কার্যালয় থেকে ছুটে এসে মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাউন্সিলর টিনু।  এরপর মেয়রের গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার মিনিট দশেক পর ফের শুরু হয় রাস্তা ও ফুটপাত দখল।

আরও জানা গেছে, অভিযানের শুরুতে বালি আর্কেডের অপর পাশে সুবসতি চক আর্কেডের নিচে একটি ফুডকোর্ট ও একটি দোকান ভেঙে দেওয়া হয়।

Yakub Group

এদিকে সিটি কর্পোরেশনের এমন অভিযানকে লোকদেখানো ও হাস্যকর বলছেন এলাকার বাসিন্দা ও পথচারীরা।

স্থানীয়রা বলেন, বাজারের ইজারদার খোদ কাউন্সিলর। অভিযানের সময় কাউন্সিলর নিজেই উপস্থিত ছিলেন। সেই কারণে হয়ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়নি। দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেছেন সিটি কর্পোরেশনের স্ট্রাইকিং ফোর্স।

পথচারী মো. মোরশেদ বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে ধুনীরপুল-ফুলতলা রাস্তা ও ফুটপাত অবৈধ দখলে। আজকের অভিযানে অবৈধ স্থাপনার একটিও উচ্ছেদ করা হয়নি। এটা কেমন অভিযান?’

এলাকার বাসিন্দা মো. জামশেদ বলেন, ‘শুনেছি এবার বাজারের ইজারাদার কাউন্সিলর নিজেই। এই কারণে হয়তো অভিযান পরিচালনাকারী দল দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেছে। অথচ এর আগে এখানে দফায় দফায় অভিযান চালানো হয়েছিল। যদিও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কাঁচাবাজার খালির পড়ে আছে বছরের পর পর। সেটি চালুর কোনো উদ্যোগ নেই। রাস্তা-ফুটপাত দখল করে চলছে অবৈধ বাণিজ্য।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চকবাজারের এক দোকান মালিক বলেন, ‘রাস্তা-ফুটপাতে ভাসমান বিভিন্ন দোকানের কারণে প্রকৃত দোকানদাররা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া দখল বাণিজ্যের কারণে এলাকায় যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র। স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা বেশ কষ্টকর। অভিযান শেষ হতে না হতেই আবার দখল হয়ে যায়।’

এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেমকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!