রবিবার রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়িতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ

রবিবার রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়িতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ 1চৌধুরী হারুনুর রশীদ, রাঙ্গামাটি : শনিবার থেকে বাস ধর্মঘট চলছে । রবিবার রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক ও নৌপথ অবরোধ ডাক দিয়েছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ।
পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের কুতুকছড়ি এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি বাস ভাংচুর ড্রাইবার হেলপার মারধর করার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে অঘোষিত বাস ধর্মঘট চলছে। এ ধর্মঘট বাস মালিক ও শ্রমিক সংঘটনের ডাকে দর্মঘট পালিত হচ্ছে ।শনিবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি-বান্দরবাণ ও রাজস্থলীসহ বিভিন্ন উপজেলায় সড়কে কোন যাত্রী পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।ফলে শনিবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি-বান্দরবান ও রাজস্থলীসহ বিভিন্ন উপজেলায় সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বাস যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।
বাস ও মোটর মালিক সমিতির কার্যকারি সভাপতি মঈন উদ্দন সেলিম বলেন,শুক্রবার সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি থেকে রাঙ্গামাটি আসার পথে অর্তর্কিত কুতুকছড়িতে ব্যারিকেড দিয়ে বাস থামিয়ে ৩০/৪০ জন যুবক লাঠি নিয়ে রাঙ্গামাটি জ-৩০৭১ গাড়িটি ভাংচুর ড্রাইবার শাহাদাত হোসেন ও হেলপার আরমানসহ যাত্রীদের উপর হামলা চালিয়ে আঘাত করে।
খবর পেয়ে পুলিশ / বাসমালিক ও শ্রমিক নেতারা আহতদের রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । তারা এ ঘটনার জন্য আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন।
ইউপিডিএফ সমন্ময়ক মাইকেল চাকমা জানান,বাস ভাংচুরের ঘটনায় ইউপিডিএফ জড়িত নয়।স্থানীয় গ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে এই ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তিনি জানান। কোতয়ালী থানার ইনচার্জ অফিসার্স মুহাম্মদ রশীদ প্রতিবেদককে জনান,পুলিশ রাস্তার ব্যারিকেড সরিয়ে ফেলেছে । বাসে হামলাকারীদের কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি ।
স্থানীয় ও ইউপিডিফের নেতারা দাবী করেন, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে রমেল চাকমার লাশ রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরে নেয়া হলেও ওইদিন পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়নি। শুক্রবার লাশের সৎকার নিয়ে সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কৃতির অবমাননার অভিযোগ করেন ইউপিডিএফ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়িতে বিরাজ করছে আতংক ও উত্তেজনা।
উল্লেখ্য, ট্রাক পোড়ানো ও বাস লুটের অভিযোগে ৫ এপ্রিল রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর সদর থেকে রমেলকে আটক করে নিরাপত্তাবাহিনী। পরে তাকে অসুস্থ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ভর্তি করা হয়। ১৯ এপ্রিল (বুধবার) সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। রমেল চাকমা ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থনপুষ্ট ছাত্র সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নানিয়ারচর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রমেল চাকমার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে স্থানীয় বিক্ষুব্দ জনতা। এই সময়ে সড়ক দিয়ে যাবতীয় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ ছাড়াও রমেলের মৃত্যু নির্যাতনের কারণে ঘটেছে দাবি করে রোববার রাঙ্গামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধসহ তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইউপিডিএফ সমর্থনপুষ্ট ছাত্র সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও স্থানীয় জনতা।
ঘটনার প্রতিবাদে রোববার রাঙ্গামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরাধ ছাড়াও ২৫ এপ্রিল রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট এবং ২৬ এপ্রিল নানিয়ারচরবাজার বয়কটের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে পিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক রোনাল চাকমা জানান, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও রমেল হত্যা প্রতিবাদ কমিটি তিনদিনের এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!