‘সবাই উঠলে নৌকা ডুবে যাবে, তাই সবাইকে ওঠানো যাবে না’

আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চট্টগ্রামে সুধী সমাবেশ

বাংলাদেশে এখন অভাব নেই। অভাব আছে শুধু খাঁটি মানুষের, ত্যাগী নেতার আর আদর্শের। আওয়ামী লীগের ৭০ বছরের ইতিহাস ত্যাগের ইতিহাস। আওয়ামী লীগ ত্যাগের বিনিময়ে বর্তমান অবস্থানে এসেছে। ১৯৪৯ সালের এই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সব গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নেতৃত্বদানের মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

রোববার (২৩ জুন) চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সুধী সমাবেশ
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সুধী সমাবেশ

বক্তব্যের শুরুতে তিনি দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ইতিহাস তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার সময় স্থান পাওয়া যায়নি, এখন প্রতিষ্ঠার সেই স্থান রোজ গার্ডেনের মালিক বাংলাদেশ সরকার। সেখানে এখন জাদুঘর হবে এবং থাকবে বাংলার ইতিহাস। আমরা চাই আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চট্টগ্রামেও এমন একটি অত্যাধুনিক অফিস হোক। এটি চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বপ্ন ছিল।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের টার্নিং পয়েন্ট হচ্ছে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে আসা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আমরা দিশেহারা হয়ে যাই তখন শেখ হাসিনা এসে আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করেন। গণতন্ত্রের মানষকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে সরকার গঠন করেছে। ২০০১ সালে আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়। বর্তমানে টানা তৃতীয়বার আমরা ক্ষমতায়। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে সবদিক থেকে। বাংলাদেশের জনগণ এখন না খেয়ে মরে না। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে আছি।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সুধী সমাবেশ
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সুধী সমাবেশ

অনুষ্ঠান শুরু করার আগে বঙ্গবন্ধু ও শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সুধী সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এছাড়াও চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এখন সবাই নৌকায় উঠতে চায়, সবাই নৌকায় উঠলে নৌকা ডুবে যাবে। তাই সবাইকে নৌকায় ওঠানো যাবে না। সরকার পর পর তিনবার ক্ষমতায় থাকার ফলে সুবিধাভোগীরা দলে আসছে। সবাইকে দলে প্রবেশ করানো যাবে না। দেশ পরিবর্তনের জন্য সরকারকে অব্যহতভাবে ক্ষমতায় থাকতে হবে। আমরা এখন অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বের অনেকদেশের জন্য এখন আমরা মডেল হচ্ছি। এই উন্নয়নের জন্য অন্যদলের গা-জ্বালা করে কারণ তারা উন্নয়ন করতে পারেনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সংগ্রাম করেই বর্তমান অবস্থায় এসেছে। শেখ হাসিনার একক প্রচেষ্টায় তিনি তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন। আওয়ামী লীগের সরকারের আমলেই সর্ববৃহৎ বাজেট হয়েছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম সংখ্যক দল আছে যে দল একটি দেশ জন্ম দেয়। আওয়ামী লীগের ইতিহাস জেনে আমাদের সচেতনতা আরো বাড়াতে হবে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মুক্তি পেয়েছি। আমাদের সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

এছাড়াও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠানের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগরের অন্যতম সহ-সভাপতি মইন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

এইচটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!