ভেঙে দেওয়া কমিটি ঠিক না করেই নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি !

ভেঙে দেওয়া কমিটি ঠিক না করেই নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ! 1এহসান আল-কুতুবী : কথা ছিল এক মাসের মধ্যেই নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হবে । কিন্তু এগার মাসেও সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করতে পারেননি নগর কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তারা নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার পর গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়েই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন । একইসঙ্গে ওইদিন মহানগর বিএনপির ৪১টি ওয়ার্ড কমিটির মধ্যে ৩৯টি ওয়ার্ডের কমিটিও ভেঙে দেয়া হয়েছিল। এসব ওয়ার্ডে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন করে কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়। কিন্তু গত ১১ মাসে মাত্র চারটি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা করতে পেরেছে বর্তমান কমিটি। ভেঙে দেওয়া ৩৯ ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষনা না করেই দীঘ প্রায় ২০ বছর পর ৪১ ওয়ার্ড নিয়ে নগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হতে যাচ্ছে ২-৩ দিনের মধ্যে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটিবিহীন নগর বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা আসায় দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কঠোর নির্দেশনায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করা হয়েছে । চলতি সপ্তাহের যে কোন দিন খালেদা জিয়ার কার্যালয় থেকে এটি ঘোষণা হতে পারে।

বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা যায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় নগর বিএনপিতে অসন্তোষ বাড়ছে এমন খবরে বিএনপি চেয়ারপারসন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে দ্রুত কমিটি গঠন করার দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব পেয়ে শুক্রবার চট্টগ্রামের নেতাদের ঢাকায় ডেকে নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকে প্রাথমিকভাবে কমিটি চূড়ান্ত করা হয়। তবে কমিটি ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট হওয়ার কথা থাকলেও এই আকার বড় হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় অবস্থান করা কয়েকজন নেতা।

বিএনপি সূত্র জানায়, নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করতে শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টানা ৭ ঘণ্টা দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের ঢাকাস্থ বাসায় বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা। বৈঠকে থাকা বিএনপির অন্য নেতারা হলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। এছাড়াও কমিটি নিয়ে কথা বলা হয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মীর নাছিরসহ সিনিয়র কয়েকজন নেতার সঙ্গে।

এ ব্যাপারে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য আমরা ঢাকায় অবস্থান করছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কয়েকদফা মিটিং হয়েছে, আজও মিটিং আছে। কমিটি চূড়ান্ত হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন অনুমোদন দিলে চলতি সপ্তাহে ঘোষণা করা হতে পারে।

জানা যায়, ১৯৯৭ সালে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে সভাপতি, দস্তগীর চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক ও এফএইচ খান ফজুকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর ২০০৪ সালে সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৮ সালে পুনরায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর অনেক সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করাসহ দলকে শক্তিশালী করার কথা থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখতে গিয়ে ওই আহ্বায়ক কমিটি সাংগঠনিকভাবে ব্যর্থ হয়।

২০০৯ সালে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। কিছুদিন পর দস্তগীর চৌধুরী ইন্তেকাল করলে সাংগঠনিক ভিত দুর্বল হয়ে পড়ে। চার সদস্যের ওই কমিটির আন্দোলন-সংগ্রাম শুধু দলীয় কার্যালয় ভিত্তিক দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছিল। সবশেষ গত বছরের ৬ আগষ্ট ডা. শাহাদাত হোসেনকে সভাপতি ও আবুল হাশেম বক্করকে সাধারণ সম্পাদক ও আবু সুফিয়ানকে সিনিয়র সহসভাপতি করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!