ঢাকায় সূচনা, চট্টগ্রামে শোডাউন/ জামায়াতের কাঁধে চড়ে অলির ‘মুক্তি মঞ্চ’

ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন হলেও চট্টগ্রামে শোডাউনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’। সোমবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অলি আহমদ এক আলোচনা সভা আহ্বান করেছেন। এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেছেন, ‘তার এই সভাকে কেন্দ্র করে আমরা শোডাউন করবো।’ এতে জামায়াতের নেতাকর্মীরাও থাকবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকায় দেওয়া ১৮ দফার ভিত্তিতে বিভাগীয় পর্যায়ে শুরুতেই কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে ‘জাতীয় মুক্ত মঞ্চ’। নতুন এই জোটটি গঠনে তিনি ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা পেয়েছেন। অন্যদিকে অনেকটা মৌন সম্মতি পেয়েছেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কল্যাণ পার্টি ও খেলাফত মজলিসের। সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ও খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা আহমদ আলি কাসেমী ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় মুক্ত মঞ্চের’ সংবাদ সম্মেলনেও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে নতুন সংগঠনের ঘোষণা

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে নতুন সংগঠনের ঘোষণা দেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমদ। ১৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে দেশবিরোধী চুক্তি প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা, জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিশন গঠন, গুম-খুন বন্ধের পদক্ষেপ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।

অলি আহমদের ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ শুরুতেই সমালোচিত হচ্ছে বিশেষ করে জামায়াতপ্রীতির কারণে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারা বলছেন, ২০১১ সাল থেকে টানা আট বছর রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা জামায়াতই নিজেদের কৌশল হিসেবেই অলি আহমদকে সামনে আনার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

তারা বলছেন, এমনিতেই নিজেদের রাজনৈতিক শাখা হিসেবে নতুন একটি সংগঠন তৈরির চিন্তাভাবনা নিয়ে গোপনে এগোচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। তার আগেই মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতাকারী সংগঠনটি জাতীয় মুক্তি মঞ্চের কর্মসূচিকে সামনে রেখে নিজেদের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে চাইছে। এটাই তাদের কৌশল।

এছাড়া আরেকটি পক্ষ মনে করছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পাওয়ার আগ্রহ ছিল অলি আহমদের। তবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব তাকে নিতে আগ্রহী ছিল না। বিএনপির এই অনাগ্রহের কারণেই অলি আহমদ নিজের একটি আলাদা অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করছেন। আট বছর ধরে রাজনীতিতে কোণঠাসা জামায়াত সেই সুযোগের অপব্যবহার করেনি, তাকে লুফেই নিয়েছে।

অলি আহমদও জামায়াতে ইসলামীর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ তার চেয়ে জামায়াতের শক্তি বেশি, রাজনৈতিকভাবে তিনি জামায়াতকে সঙ্গে নিলে তার লাভ হবে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকায় ‘জাতীয় মুক্ত মঞ্চের’ সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ বলেন, ‘৭১ এর জামায়াত এবং ‘১৯ এর জামায়াত এক নয়। এখনকার জামায়াত দেশপ্রেমী।’ তার এই ব্ক্তব্য খোদ ২০ দলীয় জোটের ভেতরেই সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘কেন তিনি জামায়াতকে ক্ষমা চাইতে বলেন না, এটা আমি জানি না।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!