ইমরান এইচ সরকার : আমরা একটা অস্থিতিশীল সময় পার করছি। খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। অভিজিৎ এর পর ওয়াশিকুরকে হত্যা করা হল। এটা খুবই অনাকাঙ্খিত যে, এভাবে একজন মানুষকে হত্যা করা হবে, আমরা সবাই নির্বিকার থাকব, এটা হতে পারে না। কেউ যদি কোনো অপরাধ থেকে থাকে, সেটার জন্য আইন আছে, বিচার আছে, আইনে তার বিচার হবে। কিন্তু একজন মানুষকে হত্যার পর তার নামে নানা অপপ্রচার চালিয়ে আমরা কী বোঝাতে চাই? কাউকে হত্যার পর আমরা যদি বলি, প্রচার করতে থাকিÑ ওই মানুষটা এটা লিখেছে, ওটা লিখেছে বলে আমরা কী হত্যাকারীকে উৎসাহী করতে চাই? কেউ যদি অসংলগ্ন কিছু লিখে থাকে, অন্যায় করে থাকে, তাহলে তার বিচার হতে পারে। কিন্তু এভাবে একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটতে থাকবে, হত্যাকারীরা নির্বিঘœ থাকবেÑ এটা তো কোনো সভ্য রাষ্ট্রের লক্ষণ নয়। একটা সভ্য রাষ্ট্রেÑ বিচার থাকবে, বিধান থাকবে, রাষ্ট্রের নাগরিকেরা বিধান অনুযায়ী চলবে, আইনের মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হবে, জবাবদিহিতা থাকবে। অথচ আমাদের এখানে কোনো বিচার নেই। আর বিচার না থাকার কারণে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো বসে আছে। বিচার না থাকার কারণে একই ঘটনার পুনার্বৃত্তি ঘটছে।
যারা হত্যাকান্ড গুলো ঘটাচ্ছে, তারা দেখছে অন্যায় করেও তাদের শারি মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। যদি হমায়ূন আজাদের ওপর হামলার বিচার নিশ্চিত হতো, তাহলে এই হত্যাকান্ড গুলো নাও ঘটতে পারত। যারা এই হত্যাকান্ডগুলো ঘটাচ্ছে তারা তো জেনেশুনেই তা করছে। কারণ, তাদের মনে এই বল আছে যে, হত্যাকান্ড সংঘটিত করলেও তার কিছুই হবে না। কারণ, সে দেখেছে আগে এ রকম হত্যাকান্ড ঘটলেও কিছুই হয়নি।
অস্থিতিশীল এ পরিস্থিেিত সরকার শক্ত পদক্ষেপ মানুষ আশা করেছিল। কিন্তু সরকার সার্বিকভাবে ব্যর্থ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে। কেননা, একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটার পর তৎপরতা আমাদের আশান্বিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিজিৎ হত্যাকান্ডের এক মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখিনি। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়েও একই অবস্থা চলছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বারবার কালক্ষেপন করা হচ্ছে। সরকারের কার্যক্রম ও পদক্ষেপে আমরা হতাশ এবং ক্ষুদ্ধ। সরকারের পদক্ষেপে আমরা খুশি নই।
লেখক : মুখপাত্র, গণজাগরণমঞ্চ।