শাহাজাহান সংঘের তৃতীয় শিকার সিটি কর্পোরেশন, জিতেছে এফএমসিও

চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ

নিজেদের প্রথম চার খেলার চারটিতেই হেরে অবনমনের শঙ্কা জেগেছিল শহীদ শাহাজাহান সংঘের শিবিরে। প্রথম চার রাউন্ডে তারা একে একে ম্যাচ হারে ব্রাদার্স ইউনিয়ন, পাইরেটস অব চিটাগাং, ইস্পাহানি এসসি এবং ফ্রেন্ডস ক্লাবের বিপক্ষে। কিন্তু লিগের পঞ্চম রাউন্ডে এসে প্রিমিয়ার লিগের এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চমকটি উপহার দেয় শাহজাহান সংঘ। শিরোপা প্রত্যাশী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতিকে প্রথম হারের স্বাদ দেয় তারা। ষষ্ঠ রাউন্ডে তারা শিকার করে আরেক জায়েন্ট এফএমসি স্পোর্টসকে।

সর্বশেষ গতকাল এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে তারা তৃতীয় জয় কেড়ে নেয় সিটি কর্পোরেশন একাদশের কাছ থেকে। আক্ষরিক অর্থেই ম্যাচ কেড়ে নেওয়া। শাহজাহান সংঘের দেয়ার ২০২ রান তাড়া করতে গিয়ে সিটি কর্পোরেশন ৩ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলে ১৭৭ রান। সিটির জয় তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু হঠাৎ ভোজবাজির মতো টপাটপ সিটির উইকেট তুলে নেয়া শুরু করে শাহজাহান সংঘের বোলাররা। ১৯২ রান তুলতেই সিটি হারিয়ে ফেলে ৯ উইকেট। তখন আবার জমে উঠে লড়াই। শেষ উইকেট জুটিতে ১০ রানের জুটি গড়ে দলকে আবারও জয়ের বন্দরে নিয়ে যায় মনজুর ও মনিরুজ্জামান। কিন্তু বন্দরে নোঙর করার আগেই শাহজাহান সংঘের মাহতাবের বলে এলবিডব্লু আউট হয়ে তীরে এসে তরী ডুবে সিটির। অনাকাঙ্ক্ষিত এ পরাজয় মেনে নিতে না পেরে আম্পায়ারের উপর নগ্নভাবে চড়াও হয় সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা বেলাল।

এর আগে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস) আয়োজিত ইস্পাহানি প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সপ্তম রাউন্ডের শেষ খেলায় টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শাহাজাহান সংঘের আফসারুল করিমের অনবদ্য ৭০ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান সংগ্রহ করে। এছাড়া মুন্না ২৮, রাসেল ২২, তারেক ১৭, শহীদ ১৭ এবং জলহাস ১৬ রান করেন। সিটি কর্পোরেশনের হারুন ৩টি এবং মনির ও মেহেদী নেন ২টি করে উইকেট। জবাবে সিটি কর্পোরেশন একাদশ দ্রুত ২ উইকেট হারালেও দলনায়ক নাজিম উদ্দিন ওয়ানডাউনে নামা রবিউলকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান। অর্ধশতক থেকে ১ রান আগে রবিউলের বিদায়ও সিটির কপালে ভাজ পড়েনি। কেননা তখনো হাতে ছিল ৭টি উইকেট এবং ব্যাটিংয়ে ছিলেন নির্ভরতার প্রতীক নাজিম উদ্দিন। কিন্তু দলীয় ১৭৭ রানের মাথায় ৭৮ বলে সাত চারের সাহায্যে ৬৪ রান করা নাজিম উদ্দিন আউট হয়ে যাওয়ার পরই ম্যাচের চিত্রপট পরিবর্তন হয়ে যায়। শাহাজাহান সংঘের শহীদ ও মাহতাব নেন ৩টি করে উইকেট।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের অন্য ম্যাচে এক তরফাভাবে জয় পায় এফএমসি স্পোর্টস। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে এফএমসি স্পোর্টস অধিনায়ক ইয়াসিন আরাফাতের নান্দনিক ৮৫ রান (৭৮ বলে, ১২ চার ও ১ ছয়ে), আফিফ হোসেনের বলের সাথে পাল্লা দিয়ে করা ৪৮ রান (৫২ বলে দুটি চার ও চারটি ছয়ে) এবং রতন দাশের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে করা ৬৬ রানের (৩৫ বলে ১টি চার ও ৮টি ছয়ে) সুবাদে ৩২২ রানের বড় স্কোর সংগ্রহ করে।
জবাবে ইস্পাহানি পিনাকের ৪৯ রান ও শাখাওয়াতের ৩৩ রান ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দুঅঙ্কের কোটা পূরণ করতে পারেনি। বিশেষ করে এফএমসির দুই পেসার তারেক আজিজ ও ইফরান হোসাইনের পেস তাণ্ডবে নাকানিচুবানি খায় ইস্পাহানি। এ দুইজন ভাগাভাগি করে নেন ইস্পাহানির ৯ উইকেট। তারেক মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৫ উইকেট। অন্যদিকে ইফরান ৪ উইকেট নিতে ব্যয় করেন ৩৪ রান। সাত ম্যাচে এফএমসির এটি চতুর্থ জয় এবং ইস্পাহানির পঞ্চম হার।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!