মেসির জোড়া গোলে লিভারপুলের বিপক্ষে বার্সেলোনার দারুণ জয়

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

চাপের মধ্যে জ্বলে উঠলেন সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। জাদুকরী ফুটবলে বার্সেলোনাকে এনে দিলেন দারুণ এক জয়।

বুধবার রাতে চলতি মৌসুমে দারুণ ফর্মে থাকা লিভারপুল এই ম্যাচেও শুরুতে বার্সাকে চেপে ধরেছিল। কিন্তু ক্রমেই ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুয়ে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন মেসি-সুয়ারেজরা। আর তাতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ‘অল রেডস’দের ৩-০ গোলে হারিয়ে দিল কাতালান জায়ান্টরা। দলের জয়ে জোড়া গোল করেছেন মেসি। বাকি ১ গোল করেছেন সুয়ারেজ।

messi-barcelona

খেলার শুরুর ১৫ মিনিট বার্সেলোনার রক্ষণে গতি আর ‘স্পিড পাসিং’র পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন সালাহ-মানেরা।

আচমকা একেকটা আক্রমণ ঠেকাতে রীতিমত হিমশিম খেয়েছেন জেরার্ড পিকে-সার্জি রবার্তোরা। কিন্তু কপাল ভালো বিপদ ঘটেনি। উল্টো ১৩ মিনিটে মেসিকে ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের ডি-বক্সে হ্যান্ডবল করেছিলেন ভ্যান ডাইক। পেনাল্টির আবেদন করে বার্সা। কিন্তু রেফারি তা মানতে অস্বীকৃতি জানান। রিপ্লেতে অবশ্য দেখা গেছে বল ভ্যান ডাইকের হাতে লেগেছিল, কিন্তু সেটা ইচ্ছাকৃত নয়।

messi-barcelona

২৬ মিনিটে স্বাগতিকদের বুক থেকে বিশাল বোঝা নামিয়ে দিলেন সুয়ারেজ। বাঁ প্রান্ত থেকে লম্বা করে বল বাড়িয়ে দেন জর্ডি আলবা। নিচু হয়ে আসা ক্রস একদম লিভারপুলের ডি-বক্সের অনেকটা ভেতরে প্রবেশ করতেই ভ্যান ডাইক ও হুয়ান মাতিপের মাঝে জায়গা বানিয়ে দুর্দান্ত এক ডাইভ দেন উরুগুইয়ান তারকা। বল তার ডান পায়ে লেগে সোজা আলিসনকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়।

সুয়ারেজের দৃষ্টিনন্দন গোলটি যেকোনো স্ট্রাইকারের জন্যই স্বপ্নের গোল। অবাক করা বিষয় হলো, চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের আসরে এটাই সুয়ারেজের প্রথম গোল, তাও করলেন নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষেই।

গোল খেয়ে কিছুটা এলোমেলো আক্রমণ শানায় লিভারপুল। কিন্তু ৩৫ মিনিটে সত্যিকারের সুযোগ এসে গিয়েছিল তাদের সামনে। হ্যান্ডারসনের নিচু করে বাড়ানো বলে জোরালো শট নিয়েছিলেন সেনেগালিজ ফরোয়ার্ড মানে। কিন্তু তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। মিনিট দুয়েক বাদে সালাহ’র প্রচেষ্টা রুখে দেন ল্যাঙ্গলেট। কিন্তু বল পেয়ে যান মিলনার। যদিও লিভারপুলের অধিনায়কের নেওয়া শটও পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও হয় লিভারপুলময়। ৪৭ ও ৫৩ মিনিটে তাদের দুটো দারুণ প্রচেষ্টা টের স্টেগানের দক্ষতার কাছে হার মানে। এরপর আরও কয়েকবার সালাহ-মানেদের সাজানো-গোছানো আক্রমণ বার্সার ডিফেন্স ভাঙতে ব্যর্থ হয়। উল্টো ৭৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে দেওয়া গোল করেন মেসি। যদিও গোলটি হতে পারত সুয়ারেজের দ্বিতীয়, কিন্তু তার অসাধারণ শট বারে লেগে ফিরে এলে ফিরতি শটে বল জালে জড়িয়ে দেন বার্সা অধিনায়ক।

ম্যাচের ফলাফল তখন অনেকটাই নিশ্চিত। ৮২ মিনিটে অসাধারণ এক ফ্রি-কিকে স্কোর লাইন ৩-০ করেন মেসি। ঝাঁপিয়েও তার নিখুঁত শট ঠেকাতে পারেননি লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসন। মেসিকেই ফাবিনিয়ো ফাউল করায় বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পেয়েছিল বার্সেলোনা। চলতি আসরে অধিনায়কের এটি দ্বাদশ গোল। দুই মিনিট পরই ব্যবধান কমানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় লিভারপুলের। রবের্তো ফিরমিনোর শট গোললাইন থেকে ঠেকিয়ে দেন রাকিতিচ। ফিরতি বলে সালাহর শট ফিরে পোস্টে লেগে।

যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ানো সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে বার্সেলোনা। উসমান দেম্বেলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও তার হাতে বল তুলে দেন।

মঙ্গলবার অ্যানফিল্ডে ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দল দুটি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!