আলোকজ্জ্বল মুশফিক-লিটনের পরও ভারতের সামনে অনুজ্জ্বল বাংলাদেশ

গা গরমের ম্যাচে মুশফিক-লিটনই যা একটু গা গরম করতে পারলেন। দলের অন্যান্য টাইগাররা নিষ্প্রভ থাকায় বাংলাদেশকে ভারতের সামনে বেশ অনুজ্জ্বলই মনে হয়। অথচ বোলিং-ব্যাটিং দুই ডিপারমেন্টেই ভালো সূচনা পেয়েছিল টাইগাররা। শুরুর দিকের চাপ বাংলাদেশের বোলাররা ধরে রাখতে না পারায় ভারত নিজেদের ইনিংসে রাহুল ও ধোনির শতকের কল্যাণে ৩৫৯ রানের পাহাড়সম রান করে। বাংলাদেশের সামনে টার্গেট ৩৬০ রান। বিশাল লক্ষ্য। এতো বড় রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। তবে ঠিকই চ্যালেঞ্জ নিতে চেয়েছে দল। ব্যাটিং অনুশীলনের চ্যালেঞ্জ! প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতই জিতল, তাও বেশ বড়ো ব্যবধানে। আর ৯৫ রানে হারা ম্যাচে বাংলাদেশ যা করলো তার নাম ব্যাটিং অনুশীলন। ম্যাচে জেতার কাজটা জমা রইলো বড় আসরের জন্য!

আলোকজ্জ্বল মুশফিক-লিটনের পরও ভারতের সামনে অনুজ্জ্বল বাংলাদেশ 1
প্রস্তুতি ম্যাচে মুশফিকের ব্যাটে ছিল রানের ঝিলিক। যদিও নার্ভাস নাইনটিজের শিকার হয়ে ৯০ রানে আউট হয়ে যান তিনি।

প্রস্তুতি ম্যাচকে বলা হয় আসলেই ম্যাচের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়া। তো সেই কাজ ভালোই সারলেন লিটন দাস ও মুশফিক রহিম। বড়ো রানের ম্যাচে দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি পেলেন। লিটন করলেন ১০ বাউন্ডারিতে করেন ৯০ বলে ৭৩ রান। মুশফিক ফেরেন ৯৪ বলে নার্ভাস ৯০ রান করে।

তাদের ব্যাটিংয়েই লড়াইয়ের পথ খুঁজে নিয়েছিল টাইগাররা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে লিটন ও মুশফিক যোগ করেন ১২০ রান। মনে হচ্ছিল তিনশ ছাড়ানো স্কোর গড়বে টাইগাররা। কিন্তু কুলদ্বীপ যাদব ও যুবেন্দ্র চাহালের বোলিং সব শেষ!

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ৩৫৯/৭ (৫০ ওভার)
ধোনি ১১৩, রাহুল ১০৮, কোহলি ৪৭
সাকিব ৫৮/২, রুবেল ৬২/২, সাইফউদ্দিন ২৭/১
বাংলাদেশ ২৬৪ (৪৯.৩ ওভার)
মুশফিক ৯০, লিটন ৭৩, মিরাজ, সৌম্য ২৫, সাইফউদ্দিন ১৮
কুলদ্বীপ ৪৭/৩, চাহাল ৫৫/৩, বুমরাহ ২৫/২
ফল: ভারত ৯৫ রানে জয়ী।

লিটন-মুশফিক ছাড়াও সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত ২৭। অন্য ব্যাটসম্যান হতাশই করেছেন! তারই পথ ধরে দল তামিম ইকবালকে ছাড়া খেলতে নামা দল ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রান তুলে অলআউট!

বিশ্বকাপের আগে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের ব্যাটিং অনুশীলনটা ভালোভাবেই সারলেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। যদিও দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা এদিন ছিলেন নিষ্প্রভ। তার আগে বল হাতে ভালো শুরু এনে দলেও টাইগারদের পরীক্ষানিরীক্ষার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় বিরাট কোহলির দল।

আলোকজ্জ্বল মুশফিক-লিটনের পরও ভারতের সামনে অনুজ্জ্বল বাংলাদেশ 2
শতকের পথে ধোনির একটি ছক্কার শট

ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ১১৩ রান আসে মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাট থেকে। মাত্র ৭৮ বলের মোকাবেলায় ৮টি চার ও ৭টি ছক্কায় এই ইনিংস সাজান তিনি। এছাড়া ১২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৯৯ বলে ১০৮ রান করেন লোকেশ রাহুল। অধিনায়ক বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে আসে ৪৭ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব আল হাসান ও রুবেল হোসেন দুটি করে উইকেট শিকার করেন।

বল হাতে দারুণ শুরু, এরপর ব্যাট হাতেও কয়েকজনের ঔজ্জ্বল্যতা ছড়ানো। এই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক উপাদান খোঁজার আছে অনেক। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও জানালেন, দলের পারফরম্যান্সে অখুশি নন তিনি, বরং সন্তুষ্ট।

যদিও বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ থেকে মাত্র ৪ দিন দূরে থেকে অধিনায়ককে ভাবাচ্ছে চোটের বিষয়টি। পেসারদের অনেকেই ছোটখাটো চোট নিয়ে আছেন, কেউ বা চোট থেকে কেবল সেরে উঠলেন। তামিম ইকবাল সদ্য চোট পেয়েছেন, চোটে ছিলেন সাকিব আল হাসানও। কারো চোট গুরুতর না হলেও ম্যাচ পরবর্তী আলাপচারিতায় অধিনায়কের কণ্ঠে বড় অংশ দখল করে নিল চোট।
https://www.youtube.com/watch?v=JVOWdhUcYWc
মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের দলে কিছু চোট সমস্যা আছে। সাকিবের চোট আছে। পেস বোলারদেরও টুকটাক চোট আছে। আমি মনে করি আমরা আজকে যা করেছি যথেষ্ট করেছি। পারফরম্যান্স মনে হল ঠিকই আছে। আমি হ্যামস্ট্রিং চোটে ভুগছি। রুবেল সাইড স্ট্রেইনের চোট থেকে ফিরেছে। মুস্তাফিজ-সাইফউদ্দিন ভালো করেছে। প্রথম ম্যাচ আর বেশি দূরে নেই। আমাদের পেসারদের চোট নিয়ে তাই যত্নশীল হতে হবে।’

দলের টপ অর্ডারের রান পাওয়া নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে মাশরাফি আরও বলেন, ‘আমাদের টপ অর্ডার নিয়মিত রান পাচ্ছে। সৌম্য গত তিন ম্যাচে ভালো করেছে। লিটন সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। মুশফিক-সাকিব-তামিমরা নিয়মিতই ভালো করছে। আশা করছি আমাদের টপ অর্ডার এভাবে রান করতে থাকবে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!