অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রিমিয়ারে উঠলো চট্টগ্রাম মোহামেডান

প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে রানার আপ আগ্রাবাদ নওজোয়ান

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংগঠন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব দীর্ঘ আট বছর পর আবারও প্রিমিয়ারে ডিভিশনে উন্নীত হলো। ২০১২ সালে মোহামেডান প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ থেকে থেকে প্রথম বিভাগে অবনবমিত হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রত্যেক মৌসুমে তারা সুপার ফোর পর্বে খেললেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। অবশেষে ২০১৮-১৯ মৌসুমে এসে তারা চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পেল, তাও পুরো লিগ জুড়ে অপরাজিত থেকে। ফলে আগামী মৌসুমে মোহামেডান প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলবে।

গ্রুপ পর্বে সাত খেলায় সাত জয় নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে সুপার ফোরে নাম লেখায় মোহামেডান। অন্যদিকে সাত খেলায় ছয় জয় নিয়ে অন্য গ্রুপের সেরা হয়ে সুপার ফোর পর্বে নাম লেখায় আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাব। সুপার ফোরে তাদের অন্য দুই সঙ্গী হয় শতদল ক্লাব জুনিয়র ও ফিরিঙ্গিবাজার লাকি স্টার ক্লাব। সুপার ফোর পর্বের নিজেদের প্রথম দুই খেলায় মোহামেডান ও নওজোয়ান জয় পাওয়ায় শিরোপার লড়াই বেশ জমে উঠে। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের চ্যাম্পিয়নের জন্য তাই অপেক্ষায় থাকতে হয় শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাবের মধ্যকার শেষ ম্যাচটি তাই অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়। আর তাতে ৬ উইকেটের বড় জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে বিজয়োল্লাসে মেতে উঠে মোহামেডান।

চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত লিগের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাব। কিন্তু মোহামেডানের স্পিন আক্রমণের সামনে নাকানি-চুবানি খায় আগ্রাবাদ নওজোয়ান। পাওয়ার প্লে-র প্রথম ১০ ওভারে আগ্রাবাদ নওজোয়ান করতে পারে মাত্র ১৩ রান! মোহামেডানের বল হাতে আক্রমণের নেতৃত্ব দেয় দলীয় অধিনায়ক তৌহিদুল আলম রাকিন। তাঁর বোলিং ফিগার দেখলেই বুঝা যায় তাকে খেলতে কতটা অসহায় ছিল নওজোয়ান। রাকিন পুরো ১০ ওভার বল করে রান দেন মাত্র ১১টি। এরমধ্যে মেডেন ওভারই ছিল সাতটি। আরেক ন্যাঁড়া স্পিনার তকিউদ্দিনও খুবই কিপটে বোলিং করেন। তিনি ৯ ওভারে দেন মাত্র ১৫ রান। অফস্পিনার হাফিজুর রহমান হীরাও তার স্পেলে দেন ১৫ রান।

রান দেয়ায় কিপটে থাকলেও তারা উইকেট শিকারে ছিলেন উদার। রাকিন, তকিউদ্দিন ও হীরা প্রত্যেকেই নেন তিনটি করে উইকেট। এদের সাঁড়াশি বোলিং আক্রমণে আগ্রাবাদ নওজোয়ানের কোন ব্যাটসম্যানই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। নয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা ইমরান বিন সিরাজ অপরাজিত ২৬ রান না করলে ৫৪ রানে ৮ উইকেট হারানো আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাব আরও বড় লজ্জার শিকার হতো। তাও শেষমেষ ৪১.৩ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তারা ৯২ রান করতে পারে। স্বল্পরানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোহামেডান ৬ রানে প্রথম উইকেট হারালেও তাদের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এসএম ফারহান অপরাজিত ৬২ রান করে দলকে সহজ জয় এনে দেন।

খেলা শেষে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মোহামেডানের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি আলী আব্বাস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিজেকেএস অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দীন শামীম, নির্বাহী সদস্য আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, নির্বাহী সদস্য ও ক্রিকেট সম্পাদক আবদুল হান্নান আকবর, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ, সিজেকেএস কাউন্সিলর এস এম শহীদুল ইসলাম, মকসুদুর রহমান বুলবুল, সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ হেলাল, দিদারুল আলম মাসুম, মো. দিদারুল আলম প্রমুখ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!