শোকের চিঠি পড়ে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন লেখিকা জেসমিন খান

শোকের চিঠি পড়ে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন লেখিকা জেসমিন খান 1এহসান আল-কুতুবী : এক লেখিকার স্মরণ সভায় শোকগাথা চিটির বর্ণনা শেষে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বরেণ্য লেখিকা জেসমিন খান। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী ) কথা সাহিত্যিক ফাহমিদা আমিনের স্মরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চ থেকে নেমে ঢলে পড়েন তিঁনি। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলেও চিকিৎসকগণ জানিয়ে দেন অনুষ্ঠানস্থল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন।

১৩ জানুয়ারি ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের টলিডো শহরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮১ বছর বয়সে মারা যান কথাসাহিত্যিক, নারী সংগঠক ও নারীকণ্ঠ পত্রিকার উপদেষ্টা ফাহমিদা আমিন। তার স্মরণে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক ও প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ ফাউন্ডেশন গতকাল বিকেলে আলোচনা সভার আয়োজন করে।
জানা যায়, লেখিকা ফাহমিদা আমিনের এক ছেলে সেনা কর্মকর্তা এনশাদ ইবনে আমিন আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় শহীদ হয়েছিলেন। তার আগে জেসমিন খানের কিশোর সন্তান মুন নগরীর ভিআইপি টাওয়ারস্থ অ্যাপার্টমেন্টের ছাদ থেকে পা পিছলে পড়ে মারা যায়। ফাহমিদা আমিনকে উদ্দেশ্য করে তিনি একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেটি ছিল সন্তান হারা এক জননীর কাছে সন্তানহারা অন্য জননীর আবেগঘন চিঠি। স্মরণসভা শুরুর পর সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে জেসমিন খান সেই চিঠিটি পাঠ করেন। তার পাঠ শুনে তখন অনেকের চোখ ভিজে উঠে শোকে। চিঠি পড়ে তিনি দর্শক সারিতে লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীমের পাশে এসে বসেন। তখন থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন তিনি। একবার অক্সিজেন অক্সিজেন বলে উঠেন। এসময় অনুষ্ঠান স্থলে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মঈনুল ইসলাম মাহমুদ, ডা. এম এ মান্নানসহ অন্তত চার পাঁচ জন ডাক্তার ছিলেন। সকলে ধরাধরি করে তাঁকে গাড়িতে তুলেন। তখনই একটা ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি নিরব হয়ে যান। তাকে প্রথমে সেন্টার পয়েন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকগণ মৃত ঘোষণা করেন। হৃদরোগে তার মৃত্যু হওয়ার কথা জানান সেখানকার চিকিৎসকরা।

জেসমিন খান রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ড্রাইডকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেম খানের স্ত্রী। তিনি ভ্রমণ কাহিনী ও আত্মজীবনীমূলক প্রবন্ধ লিখতেন। সময়ের জলছবি ও লসএঞ্জেলেসএর দিনগুলোসহ তিনটি বই রয়েছে জেসমিন খানের। জেসমিন খান বছরের বেশিরভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রের লসএঞ্জেলেসে থাকতেন। দেড় মাস আগে তাঁর বড় ভাইয়ের মৃত্যু উপলক্ষে দেশে এসেছিলেন। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তার যুক্তরাষ্ট্র ফিরে যাওয়ার কথা।
মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, একপুত্র মিকাইল খান রাসেল এবং এককন্যা মাহজাবিন ফারিয়া খানসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!