বিলাইছড়ি পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

বিলাইছড়ি পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ 1রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শশী লাল চাকমার বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । বর্তমানে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব থাকার সুবাদে ক্লিনিক পরিদর্শন করে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এবং ভুয়া টিএ বিল উত্তোলন, ঔষুধ কালোবাজারে বিক্রি, জোট পারমিট থেকে ইউএনও এর নামে উৎকুচ আদায়সহ নানা দুর্নীতি করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসটি দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে রীতিমত তার বসতবাড়ি বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছেন। ছাদের ওপর মাটি তুলে সবজি চাষ,রান্নাঘর তৈয়ার করে ঝুকির মধ্যে ফেলেছে। ছাদের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে। ফলে অন্যন্যা ষ্টাপরা সকলে আতংকের মধ্যে বসবাস করছে।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লেও উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এই পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় কোন অদৃশ্য রহস্যে রয়েছে গেছে বলে সকলে ধারনা করছেন। এক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দোহাই দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
প্রায় গত ১৫ বছর ধরে তার পরিবার নিয়ে সেখানে নীরবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বসবাস করে আসছে। নিজের বসতবাড়ির মত পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ছাদের উপর ভারী মাটি তুলে শাকসবজি চাষ করে আসছে। যাতে করে ছাদসহ পুড়ো অফিসটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যা সম্প্রতি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে বিলাইছড়ি উপজেলায় একই কর্মস্থলে থাকার কারনে দিন দিন তার ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়ে যাচ্ছে বলে স¦য়ং বিলাইছড়ি উপজেলা সদরের অনেকে ও তার অধিনষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অফিসে ব্যবহৃত মোটর বাইক তার এক আত্বীয় রাঙ্গামাটি শহরে ব্যবহার করে আসছে।
তিনি অফিসের ভিতরে রান্না-বান্না করার কারনে পুড়ো অফিসটি এখন ধোঁয়া লেগে অফিসটির রং দিন দিন নষ্ট হতে চলছে। এতে যে কোন সময় রান্নার চুলা থেকে অফিসে আগুন লেগে পুড়ো অফিসটি পুড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্খা রয়েছে বলে স্বয়ং অত্র অফিসের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেছেন।
তিনি যেহেতু অফিসে পরিবার নিয়ে থাকেন তাই সে অফিসের বিদ্যুৎ ২৪ ঘন্টা ব্যবহার করে থাকেন। যা মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল অফিস থেকে দিতে হয়। মূলত শশী লাল চাকমা মাত্র এইচএসসি পাশ সে ক্ষেত্রে একজন উপজেলা পর্যায়ে প্রথম শ্রেণীর পদে দায়িত্বে থাকা আদৌ সম্ভব কিনা তা অনুসন্ধান করলে জানা যাবে।
আরো জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে অফিসের কাজে ব্যবহার করার জন্য তাকে একটি মোটর সাইকেল ( হিরো ১০০ সি সি ) দেয়া হয়। কিন্তু সে অফিসের মোটর সাইকেলটি তার কর্মস্থলে না রেখে রাঙ্গামাটি শহরে ভালেদী আদামে তার নিজ বাড়িতে রেখে দেয়। যা সেটি এখন তার এক নিকটস্থ আত্বীয় ২৪ ঘন্টা ব্যবহার করছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সে উল্লেখিত পদে গত ১৫-২০ বছর ধরে বহাল তবিয়তে থাকলেও সে উপজেলার ক্লিনিকগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বরং ক্লিনিক গুলো পরিদর্শন না করে তিনি প্রতি মাসে ভূয়া টিএ বিল বানিয়ে অফিস থেকে টাকা উত্তোলন করে থাকে।
সরকার কর্তৃক প্রদত্ত পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সকল প্রকার ঔষুধ ক্লিনিক গুলোতে বন্টন না করে বরং ঔষুধগুলো গোপনে কালো বাজারে বিক্রি করে দেয় বলেও ঘোরতোর অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর পারমিত শাখার প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছে বলে জানা গেছে। তিনি এর সুবাধে প্রত্যেক জোট পারমিত থেকে ইউএনও এর নাম ভাংগিয়ে অবৈধভাবে ঘুষ হিসেবে টাকা আদায় করে থাকে বলে অনেক পারমিত ব্যবসায়ী নামপ্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেছে তার বিরুদ্ধে।
তিনি গত ২০ বছর আগে বরকল উপজেলা কর্মরত থাকার সময় এধরনের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি সাথে জড়িত থাকার কারনে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। প্রায় ৫/৬ বছর পর সে নানাভাবে লবিং করে ও মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে পরে চাকুরি ফেরত পায়। এ সমস্ত অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে নিখিল কুমার চাকমা রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালিন সময়ে তাকে শাস্তিমূলক হিসেবে বিলাইছড়ি উপজেলা থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল। তখন বিলাইছড়ি উপজেলার দায়িত্বকালীন সময় জেলা পরিষদের সদস্য অভিলাস তংচঙ্গ্যা পরিষদের চেয়ারম্যানকে তার দুর্নীতি বিষয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন এবং তাকে সেখান থেকে বদলী করার জন্য অনুরুধ করেন।
কিন্তু স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তাকে ব্যবহার করে তার বদলী প্রক্রিয়াকে ঠেকিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
এমন কি স্বয়ং তার অফিসের নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তা – কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রতিনিয়ত দিয়ে আসছে। তিনি তার সকল নি¤œ পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে চরম অসদাচরণ করে থাকে বলেও নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক অনেক কর্মকর্তা -কর্মচারীরা এ প্রতিবেদকে জানিয়েছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, তার পদবিতে বহাল তবিয়তে থাকার জন্য প্রতি মাসের শেষে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ঢাকা অফিসের উর্ধতন কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে থাকেন । এ ক্ষেত্রে সে উর্ধতন কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে ও বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে ঘুষের টাকা পাঠিয়ে দেন বলে জানা যায়। যা তদন্ত করলে এ সব সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।
এই বিষয়ে মুঠোফোনে সত্যতা জানতে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শশী লাল চাকমার সাথে ০১৫৫৩১৩০৯২৪ নম্বরে বার বার যোগাযোগ করা হলে রিসিভ করেনি।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক বেগম সাহা ওয়াজ বলেন,আমি চট্টগ্রামে কাজে ব্যস্ত আছি পরে রাঙ্গামাটি আসলে সাক্ষ্যতে কথা হবে ।তবে তার আগে এক সাংবাদিক বলেন শষী লাল চাকমার বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।## চৌধুরী হারুনুর রশীদ রাঙ্গামাটি ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!