ডবলমুরিং এক কিশোর’র রহস্যজনক নিখোঁজ

ডবলমুরিং এক কিশোর’র রহস্যজনক নিখোঁজ 1নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন বিল্লাপাড়া এলাকা থেকে মোঃ হোসেন (শরীফ) নামের ১৪ বছরের এক কিশোর রহস্যজনক নিখোঁজ হয়েছে। পরিবারের দাবী তাকে অপহরণ করা হয়েছে।

অপরদিকে শরীফ যে ওয়ার্কশপে কাজ করতো তার মালিকের দাবী শরীফ তার প্রতিষ্ঠান থেকে ২২ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে ডবলমুরিং থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ সম্ভব্য স্থানে একাধিকবার অভিযান চালিয়েও কিশোর শরীফকে উদ্ধার করতে পারেনি।

গত ৫ আগস্ট নগরীর ডবলুরিং থানায় শরীফের পিতা মোঃ কামাল উদ্দিনের দোয়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে- লক্ষীপুর জেলার কমলনগর থানার চর মার্টিন গ্রামের মোঃ কামাল উদ্দিননের ছেলে মোঃ হোসেন (শরীফ) বিগত ৩ মাস ধরে চট্টগ্রাম শহরের বিল্লাপাড়াস্থ মুসার ওয়ার্কশপে হেলপারের কাজ নেয়। শরীফ এর এলাকার পরিচিত ফারুক নামে একজন তাকে এনে মুসার ওয়ার্কশপে কাজে লাগায়। চট্টগ্রাম শহরে আসার পর থেকে অপহৃত শরীফ বিভিন্ন সময়ে মুসা ও ফারুকের মোবাইল থেকে বাড়ীতে মা-বাবার সাথে কথা বলতো। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে তার সাথে পরিবারের কারো কোন কথা হয়নি।

শরীফ’র পিতা অভিযোগে উল্লেখ করেন গত ৪ আগস্ট মুসা ও ফারুক তাকে ফোন করে জানায় শরীফ দোকান থেকে টাকা পয়সা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু শরীফ বাড়ীতে বা শেরশাহস্থ তার বোনের বাসায় কিংবা অন্য কোথাও না গেলে পরিবারে সন্দেহ হয়। পরদিন শরীফের পিতা চট্টগ্রাম শহরে এসে কোথাও তার ছেলের খোঁজ না পেয়ে নগরীর ডবলমুরিং থানায় নিখোঁজ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেন।

শরীফের বাবার অভিযোগ, দোকানের মালিক মূসা তার ছেলেকে আটকে রেখেছে কোথাও। কারণ মুসা তাকে প্রথমে বলেছিল, শরীফ তার কাছে আছে ৭তলায় একটি বিল্ডিং আছে এবং ২২হাজার টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে নিয়ে যেতে। কিন্তু শরীফের বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশসহ মুসার কাছে গেলে কথিত ৭তলায় অভিযান চালিয়েও অপহৃত শরীফকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে অপহরণকারী হিসেবে একজন ০১৮৮৩৬০২৯৪২ নাম্বার থেকে ফোন করে ৩০হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে শরীফের বাবাকে ফোন করে। কিন্তু তারা শরীফরে সাথে কথা বলতে চাইলে, সে অচেতন আছে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাদের দেয়া তথ্য ও ঠিকানা মতো পুলিশ গিয়েও কোন হদিস পায়নি শরীফ কিংবা তার অপহরণকারীদের।

এদিকে সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সন্তানের কোন হদিস না পেয়ে শরীফের পিতা ও পুরো পরিবার উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। শরীফের বাবার অভিযোগ, মুসাই আমার ছেলেকে অপহরণ করেছে। এখন অন্যদেরকে দিয়ে ফোন করিয়ে নিজে নির্দোষ সাজতে চেষ্টা করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডবলমুরিং থানা এস.আই.হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সম্ভ্যাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও এখনো আমারা কাউকে ধরতে পারিনি। তবে তিনি এ রহস্য উদঘাটন ও অপহৃতকে উদ্ধারে খুব সজাগ রয়েছেন বলে দাবী করেন।

ওয়ার্কশপ মালিক মুসার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই আমি কেন শরীফকে অপহরণ করবো। সেতো আমার ২২হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গেছে।

আপনি কেন শরীফ আপনার কাছে ৭তলায় আছে টাকা দিলে ফেরত দিবেন এ দাবী করেছিলেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ভাই আমি আমার টাকা আদায়ের জন্য বলেছিলাম। ওনাকে আমার কাছে আসার জন্য যেহেতু ওনার ছেলে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু ও আমার কাছে ছিলনা, এখনো নেই এবং কোথায় গেছে জানি না। এখন যারা টাকা চাচ্ছে তাদের নাম্বারতো পুলিশের কাছে আছে। পুলিশতো সে সব নাম্বার ট্রেকিং করে কিংবা যেকোনভাবে যাচাই-বাছাই করলেইতো অপরাধীরা ধরা পড়ার কথা।

এদিকে শরীফ’র পিতা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলে বেঁচে আছে কিনা জানিনা। এখনো পর্যন্ত এক সেকেন্ডের জন্য আমি ছেলের সাথে কথাও বলতে পারিনি। ছেলেকে না পেলে নিজে বাঁচবেনা বলে আহাজারী করতে করতে এ দিনমজুর প্রতিনিয়ত মূর্ছা যাচ্ছেন। তাঁর দাবী এ শহরে বায়েজীদ এলাকায় তার এক মেয়ে ছাড়া আর কোন আতœীয় স্বজনও নেই। ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে অচেনা শহরে নিজেও এক ধরনের পাগল হয়ে যাচ্ছেন বলে দাবী করেছেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!