লক্ষ্মীছড়িতে আবাসভূমি থেকে সাওতালদের উচ্ছেদের চেষ্টা

খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলায় পঞ্চাশ সাওতাল পরিবারের দীর্ঘদিনের বসবাসের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. রেজাউল করিম। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ওই ভূমি দখলে নিতে নানাভাবে হুমকি প্রদান ও হেনস্তা করছেন সাওতালদের।

বাবুল ভীম নামের একজন সাওতাল অভিযোগ করে বলেন, এখানে আমরা প্রায় পঞ্চাশ সাওতাল পরিবার বসবাস করছি। আমাদের জন্মের পর থেকে আমরা লক্ষীছড়ির ২২০ নম্বর মুয়রখীল মৌজায় বিভিন্ন স্থানে খাস দখলদার হিসাবে দীর্ঘ ভোগ দখল করে আসছি।আমাদের পিতাকে এই এলাকায়ই সমাধি করেছি। আজ আমরা ভুমি খেকো চক্রের হাত থেকে শ্মশানটিও রক্ষা করতে পারছি না।

বিবদমান ভূমিতে বসবাসকারী সাওতালরা জানান, ভূমির মালিক কোনদিন এই এলাকায় অবস্থান করেন নাই। ক্রেতা আবুল কালাম ,আনোয়ার হোসেন ও মো. রেজাউল করিম মেম্বারসহ একটি চক্র দফায় দফায় আঞ্চলিক দলিল ও এফিডেবিট হলফ নামামুলে বিভিন্ন জনকে মালিক সাজিয়ে বিক্রয় করেন। আবুল কালাম এবং আনোয়ার হোসেন, মো. রেজাউল করিম মেম্বার ওরা পরষ্পরের আত্মীয়। এখন ওই এলাকায় বিভিন্ন কোম্পানি জমি ক্রয় করছে জেনে সাওতালদের ভূমি বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চক্রটি। তারা নিরীহ সাওতালদের উপর ক্ষমতার ভয় দেখাচ্ছেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের মামলা দিচ্ছে সাওতালদের।

আবুল কালাম হাওলাদার ও আনোয়ার হোসেন বলেন, আমারা ভূমির মালিক। এটি আমাদের কেনা জমি। ভূমিতে বিরোধ আছে বলে আমরা এ ভূমি মো. রেজাউল করিম মেম্বারকে বিক্রি করি। বর্তমানে এই সম্পত্তি নিয়ে পঞ্চাশ সাওতাল পরিবার ও তাদের একমাত্র শ্মশানটি নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হয়েছে বলেই আমরা এ ভূমি বিক্রয় করে দিয়েছি।

মো. রেজাউল করিম মেম্বার জানান, আমি ক্রয়সূত্রে মালিক। এ ভূমিতে দখল রাখা আমার আইনসঙ্গত অধিকার। আমি সাওতালদের উচ্ছেদ করতে মামলা দিয়েছি। তারা আদালতে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনাই।

লক্ষীছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, ভূমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সাওতালদের সাথে বিভিন্ন লোকের পরষ্পরবিরোধী মামলা হচ্ছে।

লক্ষীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী বলেন, সাওতালদের ভূমি ও শ্মশান দখল এসব বিষয় নিয়ে অনেক আগে থেকে বিরোধ চলে আসছে। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য উপজেলা প্রসাশন ও স্থানীয়দের নিয়ে অনেকবার মীমাংসা করতে বসতে বলেছি। ইতিবাচক সাড়া পাইনি।

উল্লেখ্য, বিবদমান ভূমি খাগড়াছড়ির লক্ষিছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। ২২০ নম্বর মুয়রখীল মৌজায় অবস্থিত এ ভূমিতে স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই সাওতালদের ভোগদখলীয় আবাসভূমি। এই বিশ একর জমিতে বাস করেন পঞ্চাশ সাওতাল পরিবার।


এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!