রাঙ্গামাটিতে ইউপিডিএফ সমর্থনপুষ্ট নারী সমাবেশে হামলা: ৩ নেত্রী আহত

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি :
রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থনপুষ্ট নারী সংগঠনের এক সমাবেশে হামলা হয়েছে। শাসকগোষ্ঠীল এজেন্ডা বাস্তবায়নে সমাবেশ পন্ড করে দিতে কিছু দুর্বৃত্ত এ অতর্কিত হামলা চালায় বলে দাবি করেছেন নারী সংগঠনের নেত্রীরা। হামলায় আহত হয়েছেন তিন নেত্রী। তারা হলেন- হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা কমিটির সভাপতি মন্টি চাকমা, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানা শাখার সভাপতি এন্টি চাকমা ও সহ-সভাপতি চৈতালি চাকমা।rangamati-pic-women-gedaring-21

 

মঙ্গলবার সকালের দিকে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশের প্রায় শেষ পর্যায়ে ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে রাঙ্গামাটি জেলা জজকোর্টের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে ইউপিডিএফ সমর্থনপুষ্ট চার নারী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, সাজেক নারী সমাজ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাতে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির নিউ লাল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন মৃত পূর্ণ রঞ্জন চাকমার মেয়ে কল্পনা চাকমা। সেই সময় কল্পনা ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ অপহরণ ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় তৎকালীন কজইছড়ি সেনাক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস, ভিডিপি নুরুল হক ও পিসি সালেহ আহম্মদকে। এ তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন অপহৃত কল্পনার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা।
ঘটনায় জড়িত চিহ্নিত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজলী ত্রিপুরা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির নেত্রী শান্তি প্রভা চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা কমিটির সভাপতি মন্টি চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে কল্পনা অপহরণের সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে বক্তারা বলেন, প্রহসনমূলক এ প্রতিবেদন পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ কখনও মেনে নেবে না। সুষ্ঠু তদন্তে অবিলম্বে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস, ভিডিপি নুরুল হক ও পিসি সালেহ আহম্মদকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
এদিকে সমাবেশের প্রায় শেষ পর্যায়ে গিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষ দলের কিছু দুস্কৃতিকারী। তারা তাৎক্ষণিক সমাবেশ বন্ধ করতে বাধ্য করে। এ সময় সমাবেশকারীদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে ফেষ্টুন ভাংচুর করা হয়। এক পর্যায়ে সমাবেশস্থল ত্যাগে বাধ্য হন নারীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা বলেন, শাসকগোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে কিছু দুর্বৃত্ত সমাবেশে নারীদের ওপর নগ্ন হামলা চালিয়েছে। দুর্বৃত্তরা হঠাৎ হাজির হয়ে সমাবেশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এতে স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, সমাবেশ পন্ড করতে শাসকগোষ্ঠীর ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা নারীদের ওপর এ নগ্ন হামলা চালিয়েছে।

 

হামলার সময় কর্মীদের ওপর মারধর করা হয়। এতে মন্টি চাকমা, এন্টি চাকমা ও চৈতালি চাকমা নামে আমাদের তিন নেত্রী আহত হয়। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তিনি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

রিপোর্ট : চৌধুরী হারুনুর রশীদ,রাঙ্গামাটি।

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!