কয়েক ঘণ্টা পর, ভোররাতেই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গে

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর, ভোররাতেই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়তে চলেছে। খড়্গপুরে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১০৫ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। শক্তিশালী এই সাইক্লোনের প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, নদিয়াতে সব থেকে বেশি পড়বে। বর্ধমান ও হুগলি জেলার উপরেও ফণীর ভালই প্রভাব থাকবে। তবে এই ঝড়ের রেডিয়াস ৪০০-৫০০ কিমি জুড়ে হওয়ায় রাজ্যের প্রায় সব জেলাই এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় পড়বে। তবে কলকাতায় যখন ফণী প্রবেশ করবে, তখন এই ঝড়ের কিছুটা শক্তিক্ষয় হবে। তখন ঘণ্টায় এর গতিবেগ থাকবে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। ভারতীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ফণী বর্ধমান ও হুগলির মাঝ দিয়ে গিয়ে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ হয়ে কাল দুপুরের মধ্যে বাংলাদেশে ঢুকবে। তাই আশা করা যাচ্ছে আগামী ৫ মে, রবিবারের পর থেকে আর ফণীর প্রভাব থাকবে না এবং দুর্যোগও পুরোপুরি কেটে যাবে।

দিঘা, মন্দারমণি-সহ উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বিকেল থেকেই শুরু হয়েছিল প্রবল বৃষ্টি। দিঘা-মন্দারমণিতে উত্তাল সমুদ্র। ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। সমুদ্রের ধার বরাবর বাঁধ উপচে জল ঢুকছে সৈকত শহরে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রাত আটটা নাগাদ ওড়িশার জাজপুরের কাছে রয়েছে ফণী। অর্থাৎ কলকাতা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে এবং দিঘা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।

যদিও এখনও পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছে ফণী। আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, ওড়িশা ছেড়ে রাজ্যে আছড়ে পড়তে শনিবার ভোররাত হবে। ঝড়ের শক্তিও অনেকটাই কমবে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, সন্ধ্যার পর থেকেই ওড়িশা লাগোয়া এ রাজ্যের জেলাগুলিতে ঝড় শুরু হবে। সেই ঝড়ের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।

ধীরে ধীরে সেই ঝড়ের গতিবেগ বাড়তে থাকবে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। মাঝরাত নাগাদ সেই ঝড়ই ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি গতিবেগ নেবে। উপকূলবর্তী এলাকায় তা ১১৫-তে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাস।

এর মধ্যেই এ দিন সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ মাত্র ১৫ সেকেন্ডের একটি দমকা হাওয়া ফণীকে ঘিরে মেদিনীপুরবাসীর আতঙ্ক কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল। একটা ঝড় বয়ে যায় মেদিনীপুর শহরের মির্জাবাজার এলাকার উপর দিয়ে। সেই ঝড়ের শক্তি এতটাই বেশি ছিল যে আশেপাশের প্রায় ২৫টি বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। কোনওটা আবার বাঁশের কাঠামো নিয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।

শনিবার ভোর রাতে পশ্চিমবঙ্গীয় উপকূলে ফণীর আছড়ে পড়ার কথা থাকলেও, শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতা শহরের রাস্তাঘাটে সেই আতঙ্কের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। হাওড়া এবং শিয়ালদহ— দুই শাখায় লোকাল ট্রেনগুলোয় ভিড় তুলনামূলক কম ছিল। যাঁরা কাজে বেরিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই তাড়াতাড়ি বাড়ির অভিমুখে রওনা দিয়েছেন। অন্য দিনের তুলনায় অনেক দোকানপাটও বন্ধ। রাস্তাঘাটে মানুষের সংখ্যাও অন্য দিনের তুলনায় কম।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!