বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল অস্ট্রেলিয়া দলের ট্রাম্পকার্ড স্মিথ-ওয়ার্নার

ক্রিকেট বিশ্বে অস্ট্রেলিয়াকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়াটা অমূলক বটে। টেস্ট কিংবা ওয়ানডে ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলটির নাম যে অস্ট্রেলিয়া! বিশ্বকাপেরও সবচেয়ে সফল দল তারা। গত ১১ আসরে সাতবার ফাইনাল খেলেছে অজিরা। শিরোপা জিতেছে পাঁচবার! যেখানে কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত জিতেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দু’বার করে।

ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল ১৮৪৪ সালে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে। তবে সেই ম্যাচের মর্যাদা কেবল টিকে আছে ইতিহাসে। ক্রিকেটের আসল যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল ১৮৭৭ সালে। ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দিয়ে। যেখান থেকে উত্থান টেস্টের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ‘অ্যাশেজ।’

অজিরা প্রথম সীমিত ওভারের (৬০ ওভার) ম্যাচ খেলে ইংলিশদের বিপক্ষে, ৫ জানুয়ারি ১৯৭১ সালে। টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় ২০০৫ সালে, প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড।

সবশেষ প্রকাশিত আইসিসি র‌্যাংকিংয়ে বেশ অবনতি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের রাজারা টেস্টে এবং ওয়ানডেতে আছে পঞ্চম স্থানে। টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য এক ধাপ ওপরে, চতুর্থ স্থানে।

বিশ্বজয়: একমাত্র দল হিসেবে রেকর্ড টানা তিনবার (১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭) বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা বাকি শিরোপা জিতেছে ১৯৮৭ ও ২০১৫ সালে। রানার্সআপ হয়েছে ১৯৭৫ ও ১৯৯৬ আসরে। রেকর্ড টানা চারবারের ফাইনালিস্টও অস্ট্রেলিয়া।

স্মিথ-ওয়ার্নারের প্রত্যাবর্তন: বিশ্বকাপের আগে বড় একটা ঝড় বয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ওপর। দক্ষিণ আফ্রিকায় বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগে এক বছর নিষিদ্ধ হয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামরন ব্যানক্রফট। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাদের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা শেষে ফিরেছেন স্মিথ-ওয়ার্নার। বিপিএল শেষে আইপিএলও খেলেছেন তারা। জাতীয় দলের জার্সিতে এখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা না হলেও অনুশীলন ম্যাচ খেলেছেন স্মিথ-ওয়ার্নার।
বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল অস্ট্রেলিয়া দলের ট্রাম্পকার্ড স্মিথ-ওয়ার্নার 1
কোচ ল্যাঙ্গার স্কোয়াড সাজিয়েছেন অভিজ্ঞ ও নতুনদের দিয়ে। নিষিদ্ধ থাকলেও অজি দলে এখনও বড় তারকার নাম সাবেক অধিনায়ক স্মিথ। ওপেনিংয়ে ওয়ার্নার-খাজা প্রতিপক্ষের দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। বোলিংয়ে আগুন ঝরানোর জন্য উদগ্রীব থাকবেন টেস্ট র‌্যাংকিংর এক নাম্বার বোলার প্যাট কামিন্স। এছাড়া ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারেন টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

প্রস্তুতি: ইংলিশ কন্ডিশনে বেশ সফল অস্ট্রেলিয়া। পরিচিত পরিবেশের মূল লড়াইয়ের আগে ২৫ মে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ২৭ মে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে তারা। গত মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে অস্ট্রেলয়া। গত আট ম্যাচ ধরে অপরাজিত অজিরা।

২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া: সরাসরি মূল পর্বে খেলবে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯২ বিশ্বকাপে পর এবারই প্রথম রাউন্ড রবিনে খেলা হবে। ০১ জুন, ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফিঞ্চের দলের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। শেষ ম্যাচ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ৭ জুন। ম্যাচটি হবে ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে ২০ জুন, ট্রেন্ট ব্রিজে। অবশ্য রাউন্ড রবিনে অজিদের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তাদের ঘরে ফিরতে হয়েছিল প্রথম রাউন্ড থেকে।

২০১৯ বিশ্বকাপ স্কোয়াড: অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, উসমান খাজা, শন মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টোইনিস, অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেটরক্ষক), প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জাই রিচার্ডসন, নাথান কোল্টার-নাইল, জেসন বেহরেনডর্ফ, অ্যাডাম জাম্পা, নাথান লায়ন। প্রধান কোচ- জাস্টিন ল্যাঙ্গার (অস্ট্রেলিয়া), সহকারী কোচ- রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!