অপরাজিত নিউজিল্যান্ডের সামনে প্রতিশোধপরায়ন দক্ষিণ আফ্রিকা

গত দুই বিশ্বকাপে কিউইদের কাছে হেরে বিদায় হয়েছিল প্রোটিয়াদের

আজকের ম্যাচটি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য প্রতিশোধের বিধায় এত সহজেই ছাড় পেতে যাচ্ছে না কেন উইলিয়ামসনের দল। প্রতিশোধ এই কারণে যে, গত দুই বিশ্বকাপে এই নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১১ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং গত বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল থেকে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেই বাদ পড়ে প্রোটিয়ারা।

মুখে কেউ প্রতিশোধের কথা না বললেও, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর যে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা মুখিয়ে আছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর দারুণ ছন্দে থাকা নিউজিল্যান্ডকে ধরাশায়ী করতে চাইলে ডু প্লেসিস, ডি ককরা অনুপ্রেরণা খুঁজতে পারে নিজেদের থেকেই। সবশেষ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কাকতালীয়ভাবে ওই ম্যাচটিও অনুষ্ঠিত হয় আজকের ম্যাচের হতে যাওয়া ভেন্যু এজবাস্টনে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য আরও ভালো সংবাদ আছে। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়েই মাঠে ফিরতে চলেছেন ফাস্ট বোলার লুঙ্গি এনগিদি। সুতরাং, ফর্মের তুঙ্গে থাকা নিউজিল্যান্ড আর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মুখিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে যে জমজমাট এক লড়াই হতে চলেছে তা অনেকটা অনুমেয়।

অথচ, ডেল স্টেইন, লুঙ্গি এনগিদি ও কাগিসো রাবাদাকে নিয়ে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বোলিং গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে কপাল মন্দ হলে যা হয় আর কী- কাঁধের চোটের কারণে কোনো ম্যাচ না খেলেই দেশে ফিরে যেতে হয় দলের সেরা পেসার স্টেইনকে। এ ছাড়াও দ্বিতীয় ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েন এনগিদি। যার প্রভাব পড়ে প্রোটিয়াদের মাঠের খেলায়। সেমিফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে ইংল্যান্ডে পা রাখলেও এখন তাই টুর্নামেন্টে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে তারা।

বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনেও আজ (বুধবার) টিকে থাকার লড়াইয়ের জন্য খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিপক্ষ এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের অপরাজিত দল নিউজিল্যান্ড। ৪ ম্যাচ খেলে ৩ আর জয় আর ১ ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় ৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে কিউইরা। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে আছে তারা। আর দলের ক্রিকেটাররাও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। এক বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে তাদের কিছু ঘাটতি দেখা দিলেও, বাকি সব ম্যাচে ব্যাট হাতে সফল ব্ল্যাকক্যাপস ব্যাটসম্যানরা।

দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে বেশ এগিয়ে সাউথ আফ্রিকা। ৭০ বারের সাক্ষাতে ৪০টিতে জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। তবে বিশ্বকাপের ফলাফলে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। ১৯৯২ সালে সাউথ আফ্রিকার বিশ্বকাপে অভিষেক হয়। তখন থেকে প্রতিবারই বিশ্বমঞ্চে মুখোমুখি হয়ে আসছে দুদল। এখানে একচ্ছত্র আধিপত্য কিউইদের। বিশ্বমঞ্চে ৭ বারের সাক্ষাতে নিউজিল্যান্ডের পাঁচ জয়ের বিপরীতে সাউথ আফ্রিকা জিতেছে দুবার। বিশ্বকাপে সর্বশেষ চার আসরের সাক্ষাতেই প্রোটিয়াদের হারিয়েছে গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টরা।

২০১৫ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের স্মৃতি এখনো দগদগে সাউথ আফ্রিকার। সেই ক্ষতে প্রলেপ দেয়ার দারুণ সুযোগ পাচ্ছেন হাশিম আমলারা। বুধবার কিউইদের হারাতে পারলে গত বিশ্বকাপে হারের ক্ষতেও কিছুটা প্রলেপ দেয়া যাবে! পাশাপাশি সেমির স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে পারবে সাউথ আফ্রিকা।

টিম নিউজ
একাদশে পরিবর্তন আনার কোনো চাপ নেই নিউজিল্যান্ডের। হেনরি নিকোলসকে বেঞ্চে রেখে তাই কলিন মুনরোকে ধরে রাখতে পারে কিউইরা। তবে কন্ডিশন যদি স্পিনারদের সহায়তা করে, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে বসিয়ে মিচেল স্যান্টেনারের সঙ্গে ইশ সোধিকেও একাদশে যোগ করতে পারে নিউজিল্যান্ড।
অপরাজিত নিউজিল্যান্ডের সামনে প্রতিশোধপরায়ন দক্ষিণ আফ্রিকা 1
ইনজুরি কাটিয়ে সাউথ আফ্রিকার একাদশে ফিরছেন লুনগি এনগিদি। পিচে স্পিন ধরার ইঙ্গিত পেলে তাবরিজ শামসিকে একাদশে নিতে পারে প্রোটিয়ারা। অথবা জেপি ডুমিনিকে একাদশে নিয়ে মিডলঅর্ডার শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্পিন শক্তি বাড়ানোর পথেও হাঁটতে পারে সাউথ আফ্রিকা।
অপরাজিত নিউজিল্যান্ডের সামনে প্রতিশোধপরায়ন দক্ষিণ আফ্রিকা 2
সম্ভাব্য একাদশ
নিউজিল্যান্ড: মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরো, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, টম ল্যাথাম, জেমস নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম/ইশ সোধি, মিচেল স্যান্টেনার, লোকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্ট।

সাউথ আফ্রিকা: কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলা, এইডেন মার্করাম, ফ্যাফ ডু প্লেসিস, রসি ফন ডার ডুসেন, ডেভিড মিলার/জেপি ডুমিনি, আন্দিলে ফেলুকোয়ও, ক্রিস মরিস, কাগিসো রাবাদা, লুনগি এনগিদি ও ইমরান তাহির।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!