বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে রোগী সমাবেশ

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে রোগী সমাবেশ 1বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে শনিবার স্থানীয় একটি হোটেলে এক আলোচনা সভা ও রোগী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় হেপাটাইটিস রোগ কি ও কিভাবে সংক্রমিত হয়, রোগের কারণ ও লক্ষণ সমূহ, হেপাটাইটিসের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা হয়।

 

উক্ত সভায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের লিভার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রখ্যাত লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ প্রধান আলোচক হিসাবে মূল আলোচনা ও অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

 

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৪-৭ জন লোক হেপাটাইটিস বি এবং শতকরা ১ (এক) ভাগ মানুষ হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত। দূষিত এবং অনিরাপদ পানি ও খাবারের মাধ্যমে হেপাটাইটিস এ এবং ই রোগ হয়। এছাড়া অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ, ইনজেকশন অথবা সুঁচ এর পূনঃব্যবহার, শিরায় মাদক গ্রহণ, অপারেশন কিংবা দন্ত চিকিৎসায় অনিরাপদ যন্ত্রপাতী ব্যবহার কিংবা অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি ও সি শরীরে প্রবেশ করে। আমাদের দেশে মাতৃগর্ভ থেকে শিশুর শরীরে হেপাটাইটিস বি ছড়ায়। অধিকাংশ সময়ে হেপাটাইটিস বি ও সি রোগের কোন উপসর্গ থাকে না বিধায় রোগীরা বিভিন্ন জটিলতা যেমন জন্ডিস, পেট ও পা ফুলা, রক্ত বমি, অজ্ঞান হওয়া, এমনকি লিভার ক্যান্সার নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। এছাড়াও দেশে বা বিদেশে চাকুরীতে যোগদান এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়ে এই রোগের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। বিশেষত ঃ মনে রাখতে হবে হেপাটাইটিস বি শরীরে প্রবেশের পর কারো কারো ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন এমনকি সারা জীবন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে এবং এ ধরনের রোগীকে দেশে বা দেশের বাহিরে চাকরীর ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া অমানবিক ও অনুচিত।

 

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে রোগী সমাবেশ 2তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, স্বাভাবিক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস এ ও ই রোগ সেরে যায়। এক্ষেত্রে ভীত হয়ে কোনরকম ঝাড়-ফুক বা এ জাতীয় অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন তিনি। ডাঃ মাহমুদ আরও বলেন, হেপাটাইটিস বি ও সি রোগের বিশ্বমানের আধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে তথা চট্টগ্রামেই সম্ভব। বিশেষ করে হেপাটাইটিস সি রোগের মুখে খাবার বিভিন্ন ঔষধ এখন বাংলাদেশেই স্বল্পমূল্য পাওয়া যাওয়ায় তিনি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট ঔষধ কোম্পানীদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং এধরনের ঔষধের দাম আরও কমিয়ে আনার অনুরোধ জানান। নিরাপদ পানি ও খাবার গ্রহণে, নিরাপদ রক্ত গ্রহণ, নিরাপদ যন্ত্রপাতি ও সুঁই ব্যবহার, নিরাপদ যৌন মিলন এবং শিরায় মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে হেপাটাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন, হেপাটাইটিস বি ও সি রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী ও ব্যয়বহুল বিধায় আমাদের মত দেশে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করাই শ্রেয়। বর্তমানে হেপাটাইটিস সি রোগের প্রতিষেধক টিকা আবি®কৃত না হলেও কার্য্যকর প্রতিষেধক টিকা গ্রহণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধ সম্ভব। ডাঃ মাহমুদ জাতীয়সংঘের ঘোষিত লক্ষ্য অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস নির্মূলের জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষকে হেপাটাইটিস সম্পর্কে জানা এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা, ভূক্তভোগী রোগী, বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালক, রক্তদাতা সংগঠনের প্রতিনিধি, রোটারী প্রতিনিধি সহ সচেতনতা মূলক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন । প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!