৫ বছর পর চট্টগ্রাম হবে জলাবদ্ধতা ও যানজটমুক্ত নগরী : আবদুচ ছালাম

৫ বছর পর চট্টগ্রাম হবে জলাবদ্ধতা ও যানজটমুক্ত নগরী : আবদুচ ছালাম 1বিশেষ প্রতিনিধি : জলবদ্ধতা চট্টগ্রামের জন্য অভিশাপ উল্লেখ্য করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেছেন, আগামী ৫ বছর পর চট্টগ্রাম ৫০ বছর এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম তখন যানজটমুক্ত, জলাবদ্ধতামুক্ত একটি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন বাণিজ্যিক নগরীতে পরিণত হবে। নগরবাসীর কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন। আমি আপনাদের একটি সুন্দর বাসযোগ্য নগরী উপহার দিতে পারবো ইনশাল্লাহ।

 

তিনি শনিবার ( ১২ আগস্ট ) দুপুরে নগরীর জিইসি ওয়েল পার্ক রেসিডেন্সে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

 

‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুন: খনন, সম্প্রসারণ, সংষ্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পরবর্তী সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন সিডিএ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, একনেকে পাস হওয়া ১৪ হাজার কোটি টাকার ৩টি মেগা প্রকল্প আগামী ৩ বছরের মধ্যে শেষ হবে। ৩ বছরের মধ্যে নগরীর প্রধান ৩৬টি খালের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, সংস্কার, মাটি খনন কাজ এবং ৪৮টি ব্রীজ উচু করা হবে। পাগাড়ী ঢলে আসা বালি এক পাশে ধরে রাখা হবে। এ জন্য প্রতিটি খালের পাড়ে ৪৭ কি. মি. রাস্তা তৈরী করা হবে। যাতে স্ক্যাবেলেটরের সাহায্যে বালি উত্তোলন করা যায়। বিভিন্ন খালে ২৮টি স্লুইস গেইট করা হবে।

 

মতবিনিময় সভায় সিডিএ চেয়ারম্যান চলমান উন্নয়ন প্রকল্প, এগুলোর বাস্তবায়ন এবং একনেকে সম্প্রতি অনুমোদিত জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের গুরুত্ব সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেন।

 

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নগর উন্নয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন। গত আট বছরে সেই দায়িত্ব পালনে আমি অবিচল ছিলাম। আমি আমার যোগ্যতা, মেধার পুরোটাই এ কাজে নিয়োজিত করার চেষ্টা করেছি।

 

সিডিএ চেয়ারম্যান জানান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নগরীর লালখান বাজার থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হয়ে যাবে। শুধু জিইসি মোড়ে র‌্যাম্পের কাজ চলমান থাকবে এবং পুরো ফ্লাইওভারের কাজ আগামী বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আগামী অক্টোবর মাস থেকে শুরু হবে প্রায় ৩২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভারের কাজ। এই ফ্লাইওভারের টাইগারপাস, আগ্রাবাদ, কাস্টমস, ইপিজেড, কেইপিজেড এলাকায় বাসস্ট্যান্ড থাকবে। যাতে সহজেই গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে।

ফৌজদারহাট থেকে বায়েজীদ পর্যন্ত বাইপাস রোডের কাজ প্রায় ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের দিকে এই বাইপাস সড়কটি নগরবাসীকে উপহার দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান। পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত রিং রোডের কাজও ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে ২০১৯ সাল নাগাদ।

সম্প্রতি একনেকে অনুমোদিত ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুন: খনন, সম্প্রসারণ, সংষ্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ১৯৯৫ সালের ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান এবং ওয়াসার প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান আপডেট-২০১৬-র সমন্বয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবো। এ প্রকল্পের আওতায় ৫টি খালে স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে। সিডিএর অন্যান্য প্রকল্প মিলে আগামী ৩ বছরে মোট ২৮টি স্লুইস গেট নির্মাণ হবে নগরীতে। আর এগুলো নির্মাণের পর নগরীর সিডিএ, আগ্রাবাদ, খাতুনগঞ্জ, হালিশহর, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট এলাকায় আর জলাবদ্ধতা হবে না।

সিডিএ চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্যে নগরবাসীর প্রতি নালা-নর্দমা পরিষ্কার ও খাল দখলমুক্ত রাখার অনুরোধ জানান। তিনি সাংবাদিকদেরকের এ বিষয়ে সচেতনা সৃষ্টির ব্যাপারে অনুরোধ করেন।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিডিএ বোর্ড সদস্য জসিম উদ্দিন, জসিম উদ্দিন শাহ, কেবিএম শাহজাহান, স্থপতি সোহেল শাকুর, সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিধ শাহিনুল ইসলাম খান, উপ-সচিব অমল গুহ প্রমুখ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!