স্বাধীনতা বাঙালির সুদীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের একটি রক্তাক্ত সফল ফলক

নগর ভবন চত্বরে স্বাধীনতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধুমাত্র নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমিক ধাপ অতিক্রম করে বাঙালির সুদীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের অংশ। এ মুক্তি সংগ্রাম অর্থনৈতিক মুক্তি সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হতে চলেছে। এই অধ্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আজ বিকেলে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন পরিষদের দু’দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন। নগর ভবনস্থ কে.বি.আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, মহলবিশেষ মনে করেন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস শুধুমাত্র ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এর অর্থ দাড়ায় তারা বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের দীর্ঘ অভিযাত্রাকে অস্বীকার করেন এবং পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলে ২৪ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের যে ধারাবাহিক নেতৃত্ব দিয়েছেন তাকে খাটো করার দুরভিসন্ধিতে লিপ্ত রয়েছেন। আমরা জানি বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে ধারাবাহিকতার ১৯৪৮ সালে যেদিন বাঙালির ভাষা সংস্কৃতির উপর হামলা এসেছিল সেদিন থেকেই শুরু হয় এবং এ মুক্তিসংগ্রামের প্রেক্ষাপট সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন আজ ৭১‘র পরাজিত শক্তি নিস্তেজ হয়েছে। কিন্তু নিমূর্ল হয়নি। এ অপশক্তি ইতিহাস বিকৃতির মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের ভেতরে বিভ্রান্তির বিষ বপন করেছে তাকে উপড়ে ফেললেই ঐ অপশক্তি নির্মূল হবে। সভাপতির ভাষণে স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব আবদুল মান্নান ফেরদৌস বলেন, একটি জাতিকে স্বাধীনতা কেউ উপহার দেয় না, ছিনিয়ে নিতে হয়। ৭১ এ তা আমরা করতে পেরেছি। তার পরও বাস্তবতা ছিল পরাজিত শক্তি আমাদের মাঝেই মিশে গিয়েছিল। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির প্রশয়ে তারা লালিত পালিত হয়ে ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে এদেশকে আবারো পাকিস্তান বানাতে উদ্যোগী হয়।

তাদের সে অপপ্রয়াস শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অকুতোভয় সাহসী ভূমিকায় বাঙালি জাতির গৌরব পূনরুদ্ধার হয়েছে। এ সত্যটিকে যারা উপলদ্ধি করেন না তারা মুর্খের নরকে বসবাস করছেন। স্বাগত বক্তব্যে স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী খোরশেদ আলম বলেন একটি জাতির রক্তস্রোতে অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাস ব্যর্থ হওয়ার নজির কোথাও নেই। বাংলাদেশের এ স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার জন্য বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্রই সফল হয়নি। সে ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে শাণিত করতে হবে।

স্বাধীনতা উৎসব উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক রিদুওয়ানুল কবির সজীবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা উৎসবের আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সরাইপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল আমিন, মেয়রের একান্ত সচিব সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য রায়হান ইউসুফ, বঙ্গবন্ধু সাংষ্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অনুপ বিশ্বাস, বোয়ালখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম জহুর, কোতোয়ালী থানা আওয়মী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম, বক্সিরহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লিটন রায় চৌধুরী, এস এম মামুনুর রশিদ, সাবেক ছাত্রনেতা জালাল আহমেদ দুলাল, সংস্কৃতিকর্মী মুজিবুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দু’দিনব্যাপী স্বাধীনতা উৎসব উদযাপনের কর্মসূচি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!