ডবলমুরিং-পাহাড়তলীতে পানির জন্য ২০ হাজার মানুষের হাহাকার!

ওয়াসাও জানে না দুর্ভোগের কারণ কী

দিন দিন কমে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পাইপলাইনের পানির চাপ। ওয়াসার সেবার অবনতি হচ্ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং ও পাহাড়তলী এলাকার অধিবাসীরা ওয়াসার পানি পাচ্ছেন না। নগরীর অন্যান্য এলাকার অধিবাসীদেরও এই অভিজ্ঞতা নতুন নয়। পানির অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ওয়াসার পানি না পেয়ে গভীর নলকূপের সামনে ভিড় করছেন তারা। পানির জন্য লাইন ধরতে গিয়ে মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে প্রতিদিন। পানির অভাবে দোকানপাট ও ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দূরদূরান্ত থেকে পানি আনতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। আশ্বাস দিয়েও পানি সরবরাহ করতে পারছে না চট্টগ্রাম ওয়াসা। কী কারণে এসব এলাকায় পানি দেওয়া যাচ্ছে না, তা খোদ ওয়াসাও জানে না।

chittagong-wasa-water-crisis

জানা গেছে, ডবলমুরিং ও পাহাড়তলী থানার ঝর্ণাপাড়া, বারো কোয়ার্টার, আবুল বিডি ফ্যক্টরি, বাঁচা মিয়া রোড, সরাইপাড়া, পাহাড়তলী, লাকী হোটেল, হাজী ক্যাম্পসহ বেশ কিছু এলাকায় গত সাত দিন ধরে ওয়াসার পানি নেই। পানির জন্য হাহাকার করছেন এসব এলাকার প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ। এর প্রভাব পড়ছে দৈনন্দিন কর্মকান্ডে। রান্না-বান্না ও গোসলের জন্য অনেকে পাশের এলাকায় ধর্না দিচ্ছেন।

ঝর্ণাপাড়ার অধিবাসী সেলিম উল্লাহ বলেন, ‘ওয়াসার সঙ্গে গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) যোগাযোগ করার পর তারা জানিয়েছিলেন, সাগরিকায় ওয়াসার পানির পাইপলাইনের কাজ চলছে। তার জন্য পানি পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে পানি পাওয়া যাবে বলে তারা জানায়। এমন আশ্বাসের ২৪ ঘন্টার মধ্যেও এক ঘন্টাও পানি দেয়নি ওয়াসা। এই অবস্থা ছিল দুই দিন। গত বুধবার থেকে আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত ওয়াসার পানি সরবরাহ একেবারে বন্ধ।’

সেলিম উল্লাহ জানান, ‘ঝর্ণাপাড়ার নবী চৌধুরী রোডে নলকূপ থেকে পানি পাওয়ার জন্য লাইন ধরতে গিয়ে মহিলাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ওয়াসার পানিতে প্রেসার (চাপ) নেই। দিন দিন অবনতি হচ্ছে ওয়াসার সেবা। রান্না-বান্না, গোসল ও অজু করার জন্য পানি পাচ্ছি না।’

chittagong-wasa-water-crisis

ঝর্ণাপাড়া নবী চৌধুরী রোডের হোটেল মালিক জিয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘এক সপ্তাহ ধরে ওয়াসার পানি নেই। দোকানের কাজকর্ম চালাতে কষ্ট হচ্ছে। বাইরে থেকে ছোট এক ড্রাম পানি ২০০ টাকা দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও মোবাইল ফোন ধরেননি চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ।

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী এয়াকুব সিরাজউদ্দোলা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কী সমস্যা হয়েছে আমি দেখছি।’

একসপ্তাহ ধরে ওই সব এলাকায় পানি সরবরাহ করছেন না অথচ তা এখনো জানেন না এমন প্রশ্ন করা হলো তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে পানি সরবরাহ করছি না তা ঠিক নয়। আমরা ২৪ ঘন্টা পানি দিতে পারছি না। ২০২০ সাল থেকে আমরা ২৪ ঘন্টা পানি দিতে পারবো।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!