অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৬ জন হাসপাতালে : চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল

অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৬ জন হাসপাতালে : চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল 1সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি : সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ৪৬ জন শিশু কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ১৩ জনের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্খাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে ৫ দিনের ব্যবধানে উপজেলার সোনাইছড়ি বার আউলিয়ার পূর্ব পার্শ্বে দুর্গম পাহাড়ের ভেতরে বসবাসকারী ত্রিপুরা পাড়ায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৯ শিশু মারা যায়।

এদিকে এ পরিস্থিতিতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ও কুমিরা ইউনিয়নের যে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপজাতী শিশুরা লেখাপড়া করে সে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানর চলমান অর্ধ বার্ষিকী পরিক্ষা স্থগিত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে সীতাকুণ্ডের সকল সরকারী চিকিৎসকদের ছুটি।
.

থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূরুচ্ছফা ও জেলা সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নূরুচ্ছফা বলেন- সোনাইছড়ি ইউনিয়নের হাফিজ জুট মিলস সবুজ শিক্ষায়তন উচ্চ বিদ্যালয় ও বার আওলিয়াস্থ সোনাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ছোট কুমিরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও পরিক্ষাসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে শনিবার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি জানান উল্লেখিত বিদ্যালয় ৩টিকে বেশ কিছু উপজাতি ছাত্রছাত্রী রয়েছে। যেহেতু উপজাতি এলাকায় সংক্রামক ব্যাধি দেখা দিয়েছে সেহেতু সে ব্যাধি যাতে অন্যন্য ছাত্রছাত্রীদের ছড়িয়ে না পড়ে তাই আপাততে ৩টি স্কুল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
.

জেলা সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের কন্ট্রোলে রয়েছে। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তে সংখ্যা বাড়রেও নতুন করে মৃতের সংখ্যা বাড়েনি। রাত ১২টা পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি থেকে মোট ৪৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ৩৩ জনকে ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজে (বিআইটিআইডি) ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
.

উল্লেখ্য- জেলার সীতাকুণ্ডে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ী এলাকা ত্রিপুরা পাড়ায় (স্থানীয় ভাষায় জুম্মা পাড়া) অজ্ঞাত রোগে অন্তত ৯টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গত ৫ দিনে এই ৯ শিশুর মৃত্যু হয়। এর মধ্যে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মারা গেছে ৪ জন। তাদের প্রত্যেকের বয়স ৩ থেকে ১২ বছর বলে জানা গেছে। অসুস্থ্য আরো ৪৬ জন শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জেন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ৯ জন শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
.

নিহত শিশুরা হলো- কানাই ত্রিপুরা (৫) পিতা সুজন ত্রিপুরা, ফুখতি ত্রিপুরা (৬) পিতা-মানচি ত্রিপুরা, জানাইয়া ত্রিপুরা (৭) পিতা সুজন ত্রিপুরা, রমাপতি ত্রিপুরা (৮) পিতা- লক্ষি চরণ ত্রিপুরা, তাকিপতি ত্রিপুরা (১২) পিতা-পদ্ম কুমার ত্রিপুরা, কছম রায় ত্রিপুরা (১০) পিতা সেমাতো ত্রিপুরা, রূপালী ত্রিপুরা (৩) পিতা- সুমন ত্রিপুরা, হৃদয় ত্রিপুরা (৮) পিতা- কুম্বু ত্রিপুরা ও কৃষাণ ত্রিপুরা (২) পিতা-বিমল ত্রিপুরা।

খবর পেয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জেন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী সীতাকুণ্ডের ইউএনও, সীতাকুণ্ড থানার ওসি, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) চিকিৎসকরা আক্রান্ত রোগীদের পরিক্ষা নিরীক্ষা করেন এবং আলামত সংগ্রহ করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!