হাতি আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে আনোয়ারাবাসীর

শিশু আহত

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বন্য হাতির আক্রমণে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামে আমুর পাড়া এলাকায় এক শিশু আহত হয়েছে। আহত শিশুর নাম মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম (১০)। সে গুয়াপঞ্চক গ্রামের মোহাম্মদ জেবল হোসেনের পুত্র। জানা গেছে, শহিদুলকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) রাত আটটায় দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে কেইপিজেড ও দেয়াঙ পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে কয়েকটি হাতি। দিন দুপুর বা সন্ধ্যা নামলেই সড়কে ও লোকালয়ে চলে আসে এসব হাতি। এজন্য কেইপিজেডের দায়িত্বরত শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা প্রহরী ও আশপাশের এলাকাবাসীরদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাতি প্রতিদিন বিভিন্ন গাছপালা ও স্থাপনা ভেঙে ক্ষতি করেছে।
এর আগে গত বছরের ১৩ জুলাই আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের আবদুর রহমান (৭০) নামের একজনকে মেরে ফেলে হাতি। সে সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। এছাড়া মানুষের ঘরবাড়ি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি করছে।
এদিকে বন্য হাতির আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।

কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড) সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ২৩টি কারখানায় আনোয়ারা-কর্ণফুলী ও আশপাশের এলাকার প্রায় সাড়ে ২২ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে আশপাশের অনেকে হেঁটে কারখানায় যান। শ্রমিকেরা হেঁটে যানবাহনে ওঠেন। কিন্তু দেয়াঙ পাহাড়ে হাতি অবস্থান নেওয়ায় শ্রমিক ও নিরাপত্তাকর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। গত কয়েক মাসে হাতি কেইপিজেডের বনায়ন করা বড়-বড় নারকেল গাছসহ বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান গাছপালা ও বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভেঙে ফেলায় অন্তত ১০ থেকে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় মোহাম্মদ আবছার বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেয়াঙ পাহাড় থেকে আসা বন্য হাতিগুলো রাতে নেমে আসে লোকালয়ে। ক্ষতি করছে এলাকার মানুষের ঘর বাড়িসহ ফসল। সন্ধ্যার পরই বন্য হাতির দল বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে। এমনকি হাতির আক্রমণে বৈরাগ ইউনিয়নে একজন মানুষ নিহত হয়েছেন কয়েক মাস আগেই। আজকে আবার আমাদের গ্রামের এক শিশুকে আক্রমণ করে গুরুতভাবে আহত করে। হাতিগুলো সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ প্রশাসনকে নেওয়া প্রয়োজন।

বন বিভাগের পটিয়া রেঞ্জের বন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাতিগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য বন্য প্রাণী বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, হাতিগুলোর সরানোর বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বনবিভাগ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। আশা করি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!