মিরসরাইয়ে হামলা করে উল্টো মামলা অভিযুক্ত ইউপি মেম্বারের

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ইছাখালী ইউনিয়নে ভূমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক ইউপি সদস্য ও তার ভাইয়ের নেতৃত্বে একই পরিবারের সাত সদস্যের ওপর দফায় দফায় হামলার পরও উল্টো মিথ্যে অভিযোগ সাজিয়ে জোরারগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিকে হামলায় আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন প্রমীলা বালা দাস (৭৫)।

হামলার শিকার ছায়া রঞ্জন দাস বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২ মে) আমার বৃদ্ধা মা প্রমীলাসহ পরিবারের সাত সদস্যকে আহত করে। ইট দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিতাই মেম্বারের ভাই দীপংকর দাস আমার মাকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করে। আমার মা এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। শনিবার (৪ মে) রাতে কান্না জড়িত কণ্ঠে ছায়া রঞ্জন বলেন, কিছুক্ষণ আগে ডাক্তার এসে আমার মায়ের চিকিৎসা দিয়ে গেছেন। তার গলা অস্বাভাবিকভাবে ফুলে গেছে। আমরা তার জীবন নিয়ে শংকায় আছি।

হামলার শিকার স্থানীয় চরশরৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চিনু রানী দাস বলেন, আমাদের পরিবারের উপর হামলা করার পর ইউপি মেম্বার নিতাই কয়েকজন মহিলাকে দিয়ে আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে। ইউপি মেম্বারের নিকটাত্মীয় নান্টু বালা নামের এক নারীর মাথার চুল কেটে দিয়ে মাথায় ব্যান্ডেজ পরিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভুয়া সার্টিফিকেট নেয়। এছাড়া মেম্বারের চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী সুবেদী বালা দাসকে দিয়েও মিথ্যে অভিযোগ সাজায়।

চিনু বালা দাস আরো বলেন, আমাদের ওপর হামলার সময় নান্টু বালা ঘটনাস্থলে ছিলেন না। অথচ তিনি সহ আরো ৭-৮ জন মহিলাকে থানায় নিয়ে গিয়ে ওইদিনই আমদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

হামলার শিকার ছায়ারঞ্জন বলেন, আমাদের ওপর হামলা করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ দেয় নিতাই মেম্বার। এরপর এলাকাবাসীর পরামর্শে শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে আমিও জোরারগঞ্জ থানায় নিতাই মেম্বার ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে জোরারগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করি।

ইছাখালী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নিতাই চরণ দাসের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিককার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ রিসিভ করেননি।

দুটি অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সুজয় কুমার বলেন, জায়গা জমি নিয়ে দুটি পরিবারের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে। আমি একটু ব্যস্ত রয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যে অভিযোগগুলো তদন্ত করবো।

প্রসঙ্গত, ভূমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরৎ গ্রামে ছায়ারঞ্জন ও তার পরিবারের সাত সদস্যকে বেধড়ক মারধর করেছেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার নিতাই চরণ দাস ও তার ভাই। বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে তাদের হামলায় ছায়া রঞ্জন দাস, তার মা প্রমীলা বালা দাস ((৭৫), ছায়া রঞ্জনের স্ত্রী অঞ্জলী বালা দাস (৫০), ছেলে সমির চন্দ্র দাস, ছায়া রঞ্জনের ভাই পরিমল দাস (৫০), পরিমলের স্ত্রী দিবু মনি বালা দাস (৪৫), স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ডালিম দাস ও তার স্ত্রী চিনু দাস আহত হয়। হামলা চালায় ইউপি ম্বোর নিতাই সহ তার ভাই ভাই দীপংকর দাস, কৃষ্ণ দাস, রাম দাস ও লক্ষণ দাস।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!