চট্টগ্রামে ড্যাপ কারখানার ট্যাংক বিস্ফোরনে দুই কর্মকর্তা দায়ী! তদন্ত রিপোটে দূর্ঘটনার পাঁচ কারন-জেলা প্রশাসক

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ড্যাপ কারখানার ট্যাংক বিস্ফোরণের ঘটনার জন্য প্রতিষ্ঠানের দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে দায়ি করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দীন। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির দেয়া রির্পোটের ভিত্তিতেই ডেএপির প্রধান প্রকৌশলী দিলীপ কুমার বড়ুয়া এবং জিএম নকিবুল ইসলামকে এ ঘটনার জন্য দায়ি করেন তিনি।

14125090_1797271037185470_1106394312907607502_o

 

দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তাঁদের প্রত্যাহার করে বিভাগীয় শাস্তি ও তাঁদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া ট্যাংকের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ ধরনের সুরক্ষা যন্ত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

 

এসময় তিনি আনোয়ারায় ডিএপি সার কারখানায় ট্যাংক বিস্ফোরণের মতো বড় দুর্ঘটনার জন্য পাঁচটি কারণ তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বলে জানান।

 

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। এতেই উঠে আসে ডিএপি ট্যাংক দুর্ঘটনার পাঁচ কারণ।

DSC_1832-681x1024

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যামোনিয়া ট্যাংকটির নিরাপত্তার জন্য পাঁচ ধরনের সুরক্ষা যন্ত্র রয়েছে। দুর্ঘটনার সময় সব কটিই অকেজো ছিল। ট্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত শীতলীকরণ পদ্ধতি, গ্যাসের চাপ মাপার জন্য দুটি ‘প্রেশার গজ’ এবং ট্যাংকের তাপ ও চাপ মাপার জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি অকেজো ছিল। ট্যাংকে থাকা অতিরিক্ত গ্যাসের চাপ বের করে দেওয়া জন্য দুটি ‘প্রেশার ভেন্ট’ও দুর্ঘটনার সময় বন্ধ ছিল।

 

স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাসের চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ফ্লেয়ার সিস্টেমও দুর্ঘটনার সময় অকেজো ছিল। এসব যন্ত্রপাতি নষ্ট ও বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাপে ট্যাংকটির নিচের অংশে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ট্যাংকটি ২০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের আগে ট্যাংকটিতে ৩৪০ টন অ্যামোনিয়া গ্যাস ছিল।

 

যন্ত্রাংশ নষ্ট থাকা এবং অকেজো হয়ে পড়ার পর তা তদারকি করা হয়নি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যন্ত্রাংশ অকেজো থাকার বিষয়টি অপারেশন বিভাগ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগকে জানানো হয়।

 

 

ইনস্ট্রুমেন্ট ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ থেকে কারিগরি লোক পাঠানো হলেও তাঁরা মেরামতে সক্ষম হননি। মেরামতের বিষয়টি উপপ্রধান প্রকৌশলী দিলীপ কুমার বড়ুয়া এবং মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি ও রক্ষণাবেক্ষণ) নকিবুল ইসলামও তদারকি করেননি। এই দুই কর্মকর্তা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করলে এ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হতো।

 

 

তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘দায়ী দুই কর্মকর্তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। কারখানার কর্মকর্তারা একজন আরেকজনের ওপর দোষ চাপান। কেউ সমস্যার সমাধান করেন না। তাঁদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য ট্যাংক বিস্ফোরণের ঘটনায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় বিষয়টি মোকাবিলা করেছে।’ তদন্ত প্রতিবেদন শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।CUFL-20

 

 

 

 

 

 

এসময় তদন্ত কমিটর প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদসহ তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

রিপোর্ট : রাজীব

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!