ফেসবুকে প্রেম/ কুমিল্লায় ডেকে নিয়ে চট্টগ্রামের গার্মেন্টসকর্মীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

'বন্দুকযুদ্ধে' দুই রাব্বি গুলিবিদ্ধ

ফেসবুক প্রেমের সূত্র ধরে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় ডেকে নিয়ে এক গার্মেন্টসকর্মীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ জুন) রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের মালিখিল এলাকার একটি মৎস্য খামারের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোববার (৯ জুন) বিকেল ৩টার দিকে দাউদকান্দির বলদাখাল এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। মূলত তখনই এই ঘটনা জানাজানি হয়।

গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হওয়া গোলাম রাব্বি ও রাব্বি আহামদ নামের দুই যুবককে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুই এএসআই ও দুই কনস্টেবলসহ চারজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সিইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করেন ওই ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী। এক বছর আগে তার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মালিখিল গ্রামের রমিজ মিয়ার ছেলে গোলাম রাব্বীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

শুক্রবার (৭ জুন) রাব্বী ওই তরুণীকে বিয়ে করার ব্যাপারে তার বাবা-মা সম্মতি দিয়ে তাকে সরাসরি দেখতে চায় বলে মোবাইলে জানিয়ে দাউদকান্দি চলে আসার জন্য বলে। একথা জেনে ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে বাসযোগে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে রাত ১২টায় দাউদকান্দি বাস স্টেশনে গিয়ে পৌঁছান ওই তরুণী। এ সময় প্রেমিক গোলাম রাব্বী, তার বন্ধু আল আমিন ও রাব্বি আহমদসহ কয়েকজন তাকে নিয়ে একটি সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে রওনা দেয়।

ওই তরুণীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের মালিখিল এলাকার একটি মৎস্য খামারের অফিস কক্ষে নিয়ে যায় তারা। একসময় তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে চিৎকার শুরু করেন তরুণী। এ সময় তারা ওড়না দিয়ে তরুণীর মুখ চেপে ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে তারা তরুণীকে ঘটনাস্থলে রেখে পালিয়ে যায়।

এদিকে এ ঘটনায় ওই নারী দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মালিখিল গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে।

পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রোববার (৯ জুন) বিকেল ৩টার দিকে দাউদকান্দির বলদাখাল স্লুইসগেট এলাকায় অভিযানে গেলে আসামিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে গোলাম রাব্বী ও রাব্বি আহমদ ‘গুলিবিদ্ধ’ হয়ে আহত হয়। পাশাপাশি থানা পুলিশের এএসআই আমির হোসেন ও প্রদীপ এবং দুই কনস্টেবলসহ চার সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আহত গোলাম রাব্বী ও রাব্বি আহমদকে সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক, তিন রাউন্ড গুলি, একটি করে রামদা, চাকু ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।

ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!