স্বপ্নের মেরিণ ড্রাইভ সড়কের কাজ শেষ পর্যায়ে

স্বপ্নের মেরিণ ড্রাইভ সড়কের কাজ শেষ পর্যায়ে 1গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ : আর মাত্র কয়েকটি দিন পর শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে কক্সবাজার-টেকনাফের স্বপ্নের মেরীন ড্রাইভ সড়কটি। কারন এই সড়কটির উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এই স্বপ্নের মেরীন ড্রাইভ সড়কটি উদ্বোধন হওয়ার পর টেকনাফ উপজেলা বিশে^র দরবারে অপার সম্ভাবনাময় শ্রেষ্ট পর্যটন নগরী হিসাবে পরিচিতি লাভ করবে। কক্সবাজার পর্যটন শিল্পে যোগ হবে নতুন মাত্রা। উন্নত বিশ্বের আদলে নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের এই বিশাল দীর্ঘতম সড়কটি। বঙ্গোপসাগরের সৈকতের উপকুল ঘেসে নান্দনিক সৌন্দর্য্যে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যে ঘেরা এই মেরিণ ড্রাইভ সড়কটি দেশ-বিদেশ আগত পর্যটকদের আনন্দ উচ্ছাস আরো বাড়িয়ে দেবে। হাজার হাজার পর্যটকদের হাত ছানিতে অভিভূত হয়ে বিশাল সমুদ্রের বুকে সূর্যস্থের মনো-মুগ্ধকর অপরুপ দৃশ্য দেখতে পারবে খুব সহজে। এ মহা মেগা প্রকল্পটি উন্নয়নের বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ (ইসিবি)।
এদিকে এই সড়কটির উদ্বোধন হওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে টেকনাফের হাজার হাজার জনতা। প্রতিদিন এই সড়কটি দেখার জন্য টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে ভিড় জমাচ্ছে শত শত নারী-পুরুষ ও যুবক-যুবতীরা।

সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৪ শত ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দীর্ঘ তম ৮০ কিলোমিটার কক্সবাজার-টেকনাফের স্বপ্নের মেরিণ ড্রাইভ সড়কটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারের একটি অনুষ্ঠানে পরিবহন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের বলেছেন, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের এই মেরিণ ড্রাইভ সড়কটি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করবে। এতে করে পর্যটন শিল্প বিকাশে সহায়তার পাশা-পাশি পর্যটকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অপরুপ, লিলাভুমি ও অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে যোগ হবে বহুমাত্রা।

এব্যাপারে উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদি বলেন, অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পকে আরো বিকশিত করতে উখিয়া-টেকনাফকে নতুন রুপে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। নেওয়া হয়েছে পর্যটন বান্ধব কর্মসূচী। তার মধ্যে এই স্বপ্নের মেরিণ ড্রাইভ সড়কটি দেশী-বিদেশী আগত পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে আরো সক্ষম হবে। তার পাশাপাশি হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টেকনাফ উপজেলায় আগত পর্যটকদেরকে আকৃষ্ট করার মত তৈরী হচ্ছে নাফনদীর জইল্যার দ্বীপে নাফ ট্যুরিজম পার্ক। এখানে তৈরী হবে নেটং পাহাড়ের উপর থেকে কেবীন কারে ভ্রমনের ব্যবস্থা এবং হরেক রকমের পর্যটন স্পট। সাবরাং ইউনিয়নে তৈরী হচ্ছে এক্সক্লোসিভ ট্যুরিষ্ট জোন পার্ক।
সূত্রে আরো জানা যায়, কক্সবাজারের সংঘে টেকনাফকে সংযুক্ত করতে বিদ্যমান ৪৮ কিলোমিটার সাগর ও পাহাড় ঘেরা সড়কটি উন্নয়নে প্রাথমিক ভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মাসের মেয়াদে প্রকল্পের কাজ স¤পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সড়কের দৈঘ্য আরো ৩২ কিলোমিটার বাড়ানোর পাশা-পাশি ভূমি অধিগ্রহণ সহ আরো বিভিন্ন কাজ অর্ন্তভূক্ত করা হয়। ফলে ব্যয় বেড়ে গিয়ে ৪ শত ৫৬ কোটি টাকাতে দাঁড়ায়। এতে মেয়াদ বর্ধিত করেন ২০১৮ সাল জুন পর্যন্ত।
এদিকে মেরিণ ড্রাইভ সড়কটি পর্যটক বান্ধব হিসাবে গড়ে তুলতে রাস্তার দু-পাশে থাকবে ওয়ার্কওয়ে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সুবিধার্থে সড়ক জুড়ে থাকবে শেড, গাড়ী পার্কিং, চেঞ্জিন রুম। আরো থাকবে ফ্লেক্সিবল, পেভমেন্ট।
দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিণ ড্রাইভ সড়কে ৩টি বড় আরসিসি সেতু, ৪২টি বক্স কালভার্ট, ৩ হাজার মিটার সসার ড্রেন এবং ৫০ হাজার মিটার সিসি ব্লক ও জিও টেক্সটাইল। তার পাশাপাশি স্বপ্নের মেরিণ ড্রাইভ সড়কটি ৩ ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ইনানী থেকে শীলখালী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার। মেরিণ ড্রাইভ সড়ক ইতি মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেছে। তৃতীয় ধাপে চলছে শীলখালী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে এই ৩২ কিলোমিটার মেরীন ড্রাইভ সড়কের কাজ সমাপ্ত হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!