গিয়াস উদ্দিন ভুলু,টেকনাফ : সারা বিশ্বে পর্যটন স্পট খ্যাত বাংলাদেশের দক্ষিন সীমান্তে গভীর বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে গত দুই দিন আগে বেড়াতে আসা প্রায় সাড়ে ৭ শতাধিক দেশী বিদেশী পর্যটক আটকা পড়ে। কারন গত ৯ ডিসেম্বর হঠাৎ করে গভীর সাগরে নিম্মচাপ সৃষ্টি হওয়ায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন উপকুলীয় এলাকায় ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারী করে এবং নৌ-রুটে ট্রলার ও জাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়। সেই ঘোষনা শুনার পর থেকে গত দুইদিন ধরে সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী কোন জাহাজ চলাচল করতে পারেনি। এদিকে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে দ্বীপে আটকা পড়ে প্রায় ৭ শতাধিক দেশী-বিদেশী পর্যটক। তবে গত ১০ ডিসেম্বর বেশ কয়েকটি ফিশিং ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টেকনাফে ফিরে আসে প্রায় ৩ শতাধিক পর্যটক। অবশেষে ১১ ডিসেম্বর সকাল থেকে গভীর সাগরে নিম্মচাপ কমে আসায় স্থানীয় প্রসাশনের অনুমতি নিয়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দমদমিয়া জাহাজ ঘাট থেকে কেয়ারী সিন্দবাদ নামক একটি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উর্দ্দশ্যে রওয়ানা দেয়। জাহাজটি গন্তব্যস্থলে পৌছার পর দুপুর দুইটার দিকে কেয়ারী ক্লোজ এন্ড ডাইন নামক আরো একটি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উর্দ্দশ্যে রওয়ানা দেয়। সুত্রে জানা যায়, জাহাজ গুলো যাওয়ার সময় ঢাকা জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি গ্রুপে ৩ শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উর্দ্দেশ্য যাত্রা করে। এরপর গত দুই দিন ধরে আটকা পড়া ৫ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে টেকনাফের উর্দ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। তারপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাহাজ দুইটি টেকনাফে পৌছতে সক্ষম হয়। জাহাজ দুইটির ব্যবস্থাপক মোঃ শাহ আলম বলেন, বৈরী আবহাওয়া এবং ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় বেড়াতে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপে গত দুই দিন ধরে সাড়ে ৭ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েন। এর মধ্যে রোববার পাঁচটি ট্রলার যোগে প্রায় ৩ শতাধিক পর্যটক ফিরে আসে। বৈরী আবহাওয়া ও ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার হওয়ায় সোমবার দুপুর থেকে সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌরুটে জাহাজ চলাচলা আবার চালু করা হয়। তিনি আরো বলেন ১১ ডিসেম্বর দু’টি জাহাজে করে তিন শতাধিক পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে যায়। কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় সোমবার সকালে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং সাগর ও নাফ নদীতে মাছ শিকার ওপর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল ফের চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পাশাপাশি গত দুইদিন ধরে দ্বীপে আটকা পড়া পর্যটকদের সুন্দর ও সু-শৃংখল ভাবে টেকনাফে ফেরত আনা হয়েছে।