রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘এনজিও ফোরামের’ বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উখিয়া-টেকনাফের আশ্রিত ৩০টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২০টির মতো এনজিও কাজ করছে বলে জানা গেছে। এসব এনজিও সংস্থা মানবসেবার কথা বলে ক্যাম্পে কাজ করার অনুমতি নিলেও ঠিকাদারি, ফুড ডিসট্রিবিউটিং, শেড নির্মাণ, ওয়াটার স্যানিটেশন এন্ড হাইজিন প্রোগ্রামে পুকুর চুরির অভিযোগ করছে খোদ রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে জানা গেছে, ইউসিএফের অর্থায়নে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৬, ৭ সহ কয়েকটি ক্যাম্পে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬টি পানির বুর হোল প্রকল্পেও নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির প্রমাণ মিলেছে।

উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করলেও দুর্নীতি ও প্রহসনের আশ্রয় নিয়ে ১৭ এপ্রিল রাজশাহীর মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর নুরুল কবিরকে কাজ পাইয়ে দেয়। এসবের মূলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় উখিয়ার মালভিটা পাড়ার এনজিও ফোরামের দুর্নীতিবাজ ম্যানেজার মোশারফ হোসেন।

এনজিও ফোরামের কাজের অনিয়মের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোশারফ হোসেন বলেন, এনজিও ফোরামের কাজ তিনটি লেভেলে হয়ে থাকে। দাতা সংস্থা নির্দেশনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আমরা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কাজ করছি। নিজের এলাকার ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ ওপেন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে কাজ পেয়েছে। সেখানে আমার কোনো হাত নেই। কাজ পাওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে টেকনিক্যাল এবং পরে আর্থিক সাপোর্টের উপর নির্ভর করে কাজ দেওয়া হয়। এতে একটি কমিটিও রয়েছে। এখানে অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ নেই।

এছাড়াও ক্যাম্প কেন্দ্রিক অনিয়মের কথা বলেন, ক্যাম্প-১৮ এফ-২২ এর নুরুল ইসলামের ছেলে ওসমান (২০) বলেন, প্রতি মাসে দুই বার ত্রাণের চাল দেয়া হয়। প্রতিবার ৩০ কেজি চাউল দেয়ার কথা বললেও ৫-৭ কেজি চাল কম থাকে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর (ডব্লিউএফপি) এসব ত্রাণ বিতরণে পার্টনার এনজিও হিসেবে কাজ করে ব্র্যাক মুক্তি, ইপসা, সেভ দ্যা চিলড্রেন, রিক, ওয়ার্ল্ড ভিশন। এসব এনজিও নির্দিষ্ট সিডিউল অনুযায়ী ত্রাণ বিতরণ না করে প্রতি দুই-তিন মাসের মধ্যে এক-দুই বার ত্রাণের মাল দুর্নীতি করে আত্মসাৎ করে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে ডব্লিউএফপির লজিষ্টিক মুনতাসির হোসাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ত্রাণের মালামাল উখিয়া-টেকনাফগামী হওয়ার কথা থাকলেও গত ২৫ এপ্রিল রামু উপজেলাধীন মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টে কক্সবাজারগামী ৩৪ বিজিবি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর প্যাকেটজাত ২০ হাজার কেজি এ্যাংকর ডালবাহী কার্ভাড ভ্যান জব্দ করে। যার নম্বর (চট্টমেট্টো-ট-১১-৯৪৩১)।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!