পেকুয়ায় শিক্ষকের পিটুনিতে আহত পক্ষাঘাতগ্রস্ত শিশু ছাত্র

মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া: কক্সবাজারের পেকুয়ায় আসফি রাহাত তামিম (১৩) নামের এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত শিশু ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে পাষন্ড শিক্ষক কফিল উদ্দিন। আহত ছাত্র তামিম মডেল জিএমসি স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়া এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে।
গত সোমবার দুপুরে স্কুলে শ্রেণী কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে তুচ্ছ অজুহাতে ওই ছাত্রের উপর শারীরিক নির্যাতন চালালে আহত হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছাত্র।

এঘটনায় মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে শিক্ষক কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পিতা মোস্তাফিজুর রহমান।

আহত ছাত্র আসফি রাহাত তামিম বলেন, আমার হাত-পাসহ শরীরের একপাশ অবস (পক্ষাঘাতগ্রস্ত)। এঅবস্থায়ও নিয়মিত স্কুলে যায়। সোমবার স্কুলে যাওয়ার পর একটু খারাপ লাগলে পেছনের সারিতে বসি। এসময় এক সহপার্টির কথায় একটু হাসলেই পাঠদানরত শিক্ষক দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে আমাকে তিনটি বেত দিয়ে মারধর করে শিক্ষক কফিল উদ্দিন।

এছাড়াও আমার পক্ষাঘাতগ্রস্ত পায়ে জুতা পরতে না পারার অজুহাতেও তিনি আমার মাথায় চড় থাপ্পড় মারেন। এসময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে সন্ধ্যা দিকে আমার জ্ঞান ফিরে।

বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার ছেলে মাস তিনেক আগে স্ট্রোক করে। এতে তার শরীরের বাম পাশ অবস হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমরা তাকে ঢাকা এ্যাপালো হসপিটালে দীর্ঘ দু’মাস উন্নত চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে আসি। ডাক্তার আমার ছেলেকে সম্পুর্ণ বিশ্রামে রাখতে বললে তার আবদারের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাই। তবে আমি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করি যাতে পড়ালেখায় চাপ সৃষ্টি করা না হয়। কিন্তু এরইমধ্যে স্কুল শিক্ষক কর্তৃক আমার অসুস্থ ছেলেকে নির্মম নির্যাতন মেনে নেওয়ার নয়। এব্যাপারে আমি বিচার চাইতে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিনের সরণাপন্ন হলে তিনি আমাকে তিরষ্কার করেন। আমি আমার অসুস্থ ছেলেকে মারধরের বিচার দাবি করছি। তাই শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি।
এব্যাপারে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত শিক্ষক কফিল উদ্দিনের মুঠোফোনে (০১৮১৬-৪৩৬৮৯২) যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবউল করিম বলেন, আমি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে এঘটনার কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!