টেকনাফে ৯ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার

টেকনাফে ৯ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার 1গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ : বন্ধ হচ্ছে না মিয়ানমারের ইয়াবা পাচার। টেকনাফ সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে। গভীর বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকুলে প্রবেশ করছে লক্ষ লক্ষ বস্তা বন্ধি ইয়াবা। এতে প্রতিদিন বাড়ছে ইয়াবা পাচারকারীদের সংখ্যা। ইয়াবা কারবারীরা তাদের নিত্য নতুন কৌশলে তাদের পাচার কাজ অব্যাহত রেখেছে। মাঝে মাঝে ইয়াবাসহ যে সমস্ত পাচারকারীরা ধরা পড়ছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ ব্যক্তি হচ্ছে অসহায় রোহিঙ্গা ও হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কারন ইয়াবা ব্যবসার মুলহোতারা আড়ালে থেকে এই সমস্ত অসহায় মানুষদেরকে দিয়ে তাদের এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সীমান্ত প্রহরী টেকনাফ ২ বিজিবি সদস্যরা প্রতিনিয়ত সীমান্ত এলাকা টেকনাফের বিভিন্ন উপকুল থেকে উদ্ধার করছে লক্ষ লক্ষ বস্তা বন্ধি ইয়াবা। তবে বেশির ভাগ ইয়াবা উদ্ধারের সাথে কোন পাচারকারী আটক না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলছে বিজিবি সদস্যরা প্রতিনিয়ত যে ভাবে লক্ষ লক্ষ মালিকবিহীন ইয়াবা উদ্ধার করছে। অথচ এই ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িতরা কেন ধরা পড়ছে না। কেন তারা বার বার থেকে যাচ্ছে চোঁখের আড়ালে। তারা কি বিজিবির লড়াকু সৈনিকদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী? নাকী বিজিবির হাতে থাকা অস্ত্রের চেয়ে বেশি শক্তিশালী অস্ত্র ইয়াবা পাচারকারীদের হাতে আছে। এই প্রশ্ন গুলো এখন সাধারন মানুষের মুখে মুখে। এই নিয়ে চারিদিকে চলছে নানা রকম প্রশ্ন। সেই ধারাবাহিকতায় সফলতা হিসাবে গতকাল ১৬ এপ্রিল রবিবার ভোররাত ৫টার দিকে সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়া খালী সীমান্ত বেড়িবাধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার মালিকবিহীন ইয়াবা উদ্ধার করে। তবে এই ইয়াবা গুলোর সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি বিজিবি। এত বড় ইয়াবা চালানের মুলহোতারা রয়ে গেল আবারও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিজিবি এই ইয়াবা গুলোর মুল্য ধার্য্য করেছে ২৯ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
নাম প্রকাশ্যে অনিশ্চুক কয়েকজন বিজিবি সদস্য অভিমত প্রকাশ করে বলেন, সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সৈনিকরা রাত দিন পরিশ্রম করে ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে। সেই ধারাবাহিকতার সফলতা হিসাবে আমরা প্রতিনিয়ত উদ্ধার করতে সক্ষম হচ্ছি কোটি কোটি টাকার ইয়াবা। তারা আরো বলেন, ইয়াবা পাচারের মুলহোতারা সব সময় আড়ালে থেকে তাদের অবৈধ কর্মকান্ড ও ইয়াবা পাচারের কার্য্যক্রম অব্যাহত রাখে। স্থানীয়রা যদি ইয়াবা পাচারের মুলহোতাদের ধরতে ও চিহ্নিত করার সহযোগীতা করলে, আমরা তাদেরকে আইনের আওয়াতাই খুব সহজেই নিয়ে আসতে সক্ষম হবো। তাই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের ইয়াবা পাচার ও আড়ালে থাকার গোপন তথ্য আমাদেরকে দিলে আমরা তাদেরকে ইয়াবাসহ আটক করতে সক্ষম হবো।
এদিকে দুপুর ১২ টায় টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে: কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ ৯ লক্ষ ৮০ হাজার মালিকবিহীন ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিশ^স্থ গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানা যায়, সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী নামক এলাকা দিয়ে সাগর পথে ইয়াবার একটি বড় চালান মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। উক্ত গোপন সংবাদে তথ্য ভিত্তিতে আমার নেতৃত্বে ২ ব্যাটালিয়ান সদর দপ্তর থেকে একটি বিশেষ টহলদল অভিযানে যায়। হারিয়াখালী বেড়িবাধ এলাকায় অবস্থান করি। কিছুক্ষন পর দেখা যায় কয়েকজন লোক বস্তা মাথায় করে সাগর পাড় দিয়ে আসছে। এর পর বিজিবি সদস্যরা সামনে অগ্রসর হলে বিজিবি উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা বস্তা গুলো পেলে সু-কৌশলে ট্রলারে করে সাগর পথে পালিয়ে যায়। তার পর ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ইয়াবার বস্তা গুলো উদ্ধার করে প্রায় ৩০ কোটি টাকার মুল্যমানের ৯ লক্ষ ৮০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ইদানিং ইয়াবা পাচার বেড়েই যাওয়ার কারন দেখিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, সাবরাং ইউনিয়নের যে সমস্ত অসাধু ব্যক্তিরা দুই এক বছর আগে মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজে জড়িত ছিল। মানব পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখন তারা সিন্ডিকেট তৈরী করে ইয়াবা পাচারে জড়িত হয়েছে। তার কারনে সাবরাং ইউনিয়নে উপকুলের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ইয়াবা পাচার বেড়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বিজিবি সৈনিকদেরকে স্থানীয়রা সহযোগিতা করলে এই সমস্ত ইয়াবা পাচারের মুলহোতাদেরকে আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসতে সক্ষম হব।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!