নিজস্ব প্রতিনিধি,চকরিয়া: কক্সবাজারের চকরিয়ায় কয়েকটি সিন্ডিকেটের সালিশ বাণিজ্যের কারণে জনপ্রতিনিধি ও গ্রামীণ আদালতের প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়ছে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোর বিচার প্রার্থীরা। প্রভাবশালী মহলের আস্কারা ও আশ্রয়ে থেকে সালিশ বাণিজ্যে নিয়োজিতরা থানা কেন্দ্রিক ছাড়াও গ্রামীণ জনপদের সর্বত্র সালিশ বাণিজ্য নিয়ে এখন বেপরোয়া। তাদের বেশিরভাগ সালিশে উপস্থিত রাখা হয়না জনপ্রতিনিধিদের। টাকার বিনিময়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো সালিশ বিচার করতে গিয়ে প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। এসব সালিশ বাণিজ্য বন্ধ না হলে গ্রামীণ আদালতের প্রতি জনগণ বিমুখ হয়ে পড়তে পারে বলে জনপ্রতিনিধিদের অভিমত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিংহভাগ সালিশ বাণিজ্য চলে থানার ভেতরে-বাইরে। কয়েকজন ব্যক্তি থানার অদূরে নামমাত্র অন্য কাজের অজুহাতে দোকান ভাড়া নিয়ে রীতিমতো অফিস খুলে বসেছে সালিশ বাণিজ্য করতে। বিভিন্ন বিচার প্রার্থীরা থানায় অভিযোগ করার পর ওই অভিযোগ পুলিশের উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শককে তদন্ত করতে দেয়ার পর ওই অভিযোগ নিয়ে নোটিশ জারির মাধ্যমে সালিশি বৈঠক শুরু হয়। এসব বৈঠকে পরিচিত ১৫-২০জন ব্যক্তি ঘুরেফিরে সালিশকার হয়ে বাণিজ্য শুরু করে। ওই সালিশকারদের পক্ষপাতিত্বের কারনে প্রায়শই হট্টগোল লেগে থাকে থানা এলাকায়। বেশিরভাগ সালিশ হয় সকাল ও সন্ধ্যায়।
এদিকে চকরিয়া পৌরশহরের মার্কেটের সীমানা বিরোধ নিয়ে প্রথমে থানায় পরে উপজেলা পরিষদে বৈঠকের পর সর্বশেষ থানা রাস্তার মাথায় সালিশী বৈঠক হয় ১৭ অক্টোবর। এদিন থানা কেন্দ্রিক সালিশকার আবদুর রশীদের পক্ষপাতিত্বমূলক উস্কানী ও আস্কারা পেয়ে একপক্ষ অন্যপক্ষের উপর হামলা চালালে ৫ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত জহির আহমদ সওদাগর হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে অবৈধ সালিশকারদের সাথে কতিপয় পুলিশের যোগসাজস রয়েছে। একে অপরকে নিয়োজিত করে সালিশের নামে মধ্য ও নিন্মবিত্ত মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব সালিশকারের ফাঁদে পড়ে অনেকেই এখন সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসেছেন। আবার কেউ কেউ হয়েছেন ঘরছাড়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওই সালিশকারদের দমন করতে না পারলে জনপ্রতিনিধি ও গ্রামীণ বিচারের প্রতি সাধারণ মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। সালিশ বাণিজ্যে নিয়োজিতরা পুলিশের সাথে যোগসাজস থাকায় নিজেরা কিছুই করতে পারছেননা বলে জনপ্রতিনিধিদের অভিমত।
এ ব্যাপারে পুলিশ জানায়, থানার ভেতরে কোন সালিশ বাণিজ্য হয়না। পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযোগের তদন্ত করতে দু’পক্ষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মাত্র।