কুতুবদিয়ায় গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা

কুতুবদিয়ায় গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা 1কুতুবদিয়া সংবাদদাতা : কুতুবদিয়ার অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ সড়কগুলো প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও সাগরের নিয়মিত জোয়ার-ভাটায় বলি পাঠায় পরিনত হয়ে মারাতœক বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ৫৪ কিলোমিটার সড়ক। ফলে এসব সড়ক দিয়ে যাতায়ত করতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী,রোগী, বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবি মানুষ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়া দ্বীপের ৬ ইউনিয়নের তিন স্তরের ২৫৪ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যান্ত নাজুক। তন্মধ্যে উপজেলা সড়ক ১৪.০৭ কিলোমিটার, ইউনিয়ন সড়ক ১৪.৯০ কিলোমিটার,গ্রামীণ সড়ক এ টাইপ ৮২.২৩ কিলোমিটার,গ্রামীণ সড়ক বি টাইপ ১৪২.২৩ কিলোমিটারসহ ২৫৪ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুতুবদিয়া দ্বীপের উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং, লেমশীখালী, কৈয়ারবিল, বড়ঘোপ, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়কই ভেঙে গেছে।

উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আ.স.ম শাহরিয়ার চৌধূরী জানান, বিগত ছয় বছর ধরে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকায় প্রতিনিয়তই জোয়ার-ভাটা বসায় গ্রামীণ সড়কগুলো সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও সড়ক ও জনপথ বিভাগের আজম সড়কের উত্তর ধুরুং এলাকায় তিন কিলোমিটার সড়ক ভেঙে গেছে। উত্তর ধুৃরুং ইউনিয়নে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা এমন পর্যায় গিয়ে ঠেকেছে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে নৌকা ছাড়া কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই। জোয়ারের সময় এ ইউনিয়নে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে বেশী। আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের তারলরচর, আনিচের ডেইল, পূর্ব আলী আকবর ডেইল,ফতেহ আলী সিকদার পাড়া, কালুয়ার ডেইল গ্রামের গ্রামীণ সড়কগুলো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। আলী আকবর ডেইল শান্তি বাজার থেকে তারলরচর গ্রামের সাথে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

তাবলরচর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আ’লীগ নেতা কাইমুল ইসলাম জানান, আজম সড়ক ভেঙে যাওয়ায় তাবলরচর গ্রামের স্কুল কলেজে পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ ১০ হাজার মানুষের উপজেলা ও ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এ দূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনের সাংসদ আলহাজ আশেক উল্লাহ রফিককে জানালে তাৎক্ষনিক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ভাঙন আজম সড়ক মেরামত করার জন্য নিদের্শ দেন।

কুতুবদিয়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) সৌভ্রাত দাশ ভাঙন সড়ক এলাকা পরিদর্শন করেন। এমপির নির্দেশে গত তিন দিন ধরে শতাধিক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ভাঙন মেরামত কাজ শেষ করেন উপজেলা আ”লীগ নেতা কাইমুল ইসলাম। প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোরার আঘাতে আজম সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ঐ এলাকার জোয়ারের নোনা জলে শতাধিক একর ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ার কারণে চাষীরা আউশ চাষ করতে পারেনি। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে আজম সড়ক মেরামত করার ফলে ঐ এলাকায় আমন চাষাবাদ হবে বলে উপ-কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন।

বড়ঘোপ ইউপির চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধূরী জানান,আজম কলোনী,অমজাখালী,মনোহরখালী,মুরালিয়া,ঘোনারমোর,উত্তর বড়ঘোপ এলাকার গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে যাওয়ায় পথচারীদের যাতায়াত করতে মারাতœক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মহসীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, উপজেলার ৬ ইউনিয়নের বিধ্বস্ত ৫৪ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদা পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অবশ্য বর্তমানে ৬ ইউনিয়নের ১০টি সড়কের সাড়ে ১২ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের কাজ চলমান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!