ভিড় কমেছে চট্টগ্রামের বিপণীবিতানে

শেষ সময়ে ছাড় দিলেও মিলছে না ক্রেতা

চাঁদ উঠলে বুধবার হবে ঈদ। ঈদের শেষ মুহূর্তে চট্টগ্রামের বিপণী বিতানগুলোতে সেই উপচেপড়া ভিড় নেই। বেশ কয়েকটা মাকের্টে ছাড় দিয়েও মিলছে না ক্রেতা। গেল বছরের তুলনায় এই বছরে ৩৫-৪০% বেচাকেনা কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। মাকের্টগুলো প্রায় ক্রেতাশূন্য। গভীর রাত পর্যন্ত মাকের্টগুলো খোলা থাকলেও ক্রেতা সমাগম কমেছে। চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন মাকের্ট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

নিউ মাকের্ট, সানমার ওশান সিটি, আফমি প্লাজা, ইউনেসকো, চিটাগাং শপিংসহ নগরীর বিপণীবিতানগুলোতে ভিড় কমেছে। তবে চট্টগ্রামের টেরিবাজার, রেয়াজউদ্দিন বাজার ও তামাকুণ্ডি লেনের বিপণীগুলো সরগরম ছিল।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নগরীর বাণিজ্যিক এরিয়া আগ্রাবাদের আখতারুজ্জামান সেন্টার রুপসী শাড়িজ-এর দোকানে কর্মচারীরা বসে আছেন, কোন ক্রেতা নেই। সোমবার (৩ জুন) সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ক্রেতা ছিল না। অলসভাবে দোকানিরা বসে আছেন। তবে একই মার্কেটে সালোয়ার-কামিজ, জুতা, বেবি আইটেমের দোকানগুলোতে কিছুটা ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বেচাকেনা বেশি হয় বলে জানালেন দোকানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজম খান।

নগরীর বিপণীবিতানগুলোর ব্যবসায়ীরা জানান, তীব্র গরম, রাস্তার যানজট, নগরের মধ্যে অতিরিক্ত শপিং মল, গ্রামেও শপিং সেন্টার হওয়ায় শহরের মাকের্টগুলো গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩৫-৪০% ক্রেতা কমে গেছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সমস্যাতো আছেই। সব মিলিয়ে রোজা পনেরটির পর কিছুটা ব্যবসা হয়েছে।

আখতারুজ্জামান সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইকবাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আখরুজ্জমান সেন্টারে সকল কাপড়সহ ও অন্য জিনিসের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত সবার পছন্দের পোশাকের মাকের্ট এটি। তবে গত বছরের তুলনায় এই বছর ব্যবসা কম। তীব্র গরম ও হালিশহর পোর্ট কানেক্টিং রুট সংস্কারের কারণে এই ক্রেতাশূন্য অবস্থা বলেও তিনি দাবি করেন।
এদিকে, সকাল থেকে নগরীর অভিজাত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাকের্টেগুলোর চেয়ে জহুর মাকের্ট ও রাস্তার পাশের ফুটপাতে অস্থায়ী দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। পটিয়া থেকে এসে নিউ মার্কেট ফুটপাত থেকে ঈদের বাজার করছেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এসি মার্কেটগুলো গলা কাটা দাম নেয়। যেখানে ১০০০-৮০০শ টাকার জুতা ফুটপাত থেকে নিচ্ছি ৪০০-৫০০ টাকায়। এছাড়া অন্যন্যা জিনিসও ফুটপাতে কম টাকায় কেনা যায়।’

হকার মাকের্টে ঈদ বাজার করতে এসেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান। তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, এখানে কাপড় সস্তা। এসি মাকের্টের চেয়ে অনেকটা কম দামে কাপড় কেনা যায়। ছোট ও বড় সবার আইটেম এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়।

বিপণী বিতান মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খুরশেদ আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ১৫ রমজান থেকে কিছুটা ব্যবসা করেছি। এর আগে গরমের তীব্রতা, রাস্তায় যানজটসহ বেশ কয়েকটা সমস্যার কারণে গত বছরের তুলনায় এবার মার্কেটে ক্রেতা সমাগম কম লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া আগে শপিং করতে লোকজন গ্রাম থেকে শহরে আসতো। ওখানেও এসি মাকের্ট হওয়াতে নগরীর মাকের্টগুলোতে এর প্রভাব পড়েছে। কাল চাঁদ উঠলে বেচাকেনা বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।

নগরীর বেশ কয়েকটা ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ১০ রমজানের পর থেকে ব্যবসা ভাল হয়েছে। সকাল-রাত একটা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। এখানে ধনীরা ছাড়া আর সবাই আসেন। দাম কম। সবাই কম টাকার মধ্যে থেকে ঈদের আনন্দ করতে চায়।

উল্লেখ্য, এবার যুবক-কিশোরদের পছন্দের পোশাক পাঞ্জাবি-পাজামা,কাবলি স্যুট। নারীরা কিনছেন হাল ফ্যাশনের গাউন, সারারা ও গারারা ও বিভিন্ন নামের থ্রিপিস ও বুটিকস। সবার দেশীয় পণ্যের চেয়ে বিদেশি পণ্যের প্রতি ঝোঁক বেশি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অনেক ব্যবসায়ীরা।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!