রাতভর অপেক্ষার পর হাসির ঝিলিক, প্রতীক্ষা এবার ফিরতি টিকেটের

নগরীতে পপকর্ন বিক্রি করেন গোলাপ মিয়া। তার পরিবারের সদস্যরা থাকেন গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। প্রতিবার বাসে করে বাড়ি গেলেও এবার ট্রেনে বাড়ি যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। রোববার টিকেট বিক্রির শেষ দিনে এসে টিকেট মিললো ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেসে। রাতভর লাইনে দাঁড়িয়ে ১১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে যখন টিকেট হাতে পেলেন তখন এক নিমিষেই তার সব কষ্ট ভুলে গেলেন।

গোলাপ মিয়া আগামী ৪ জুন বাড়ি যাওয়ার তারিখ ঠিক করে মন স্থির করলেন ২৬ মে অগ্রিম টিকেট কিনবেন। কোনভাবে টিকেট যাতে মিস না হয় সেজন্য শনিবার (২৫ মে) রাত ১০টায় চলে আসেন চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে। টিকেট বিক্রি শুরুর ১১ ঘন্টা আগে স্টেশনে এসে দেখেন টিকেট প্রত্যাশীদের প্রচণ্ড ভিড়। তা দেখেই মনে অজানা শঙ্কা জাগে গোলাপ মিয়ার। রাত গড়িয়ে সকাল হয়। দীর্ঘ লাইন শেষ করে যখন টিকেট কাউন্টারের সামনে এলেন তখন দুপুর দুইটা। অবশেষে তার আশা পূর্ণ হলো। টিকেট পেয়ে তার চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক।

টিকেট প্রাপ্তির পর লাইন থেকে বের হতেই কথা হয় গোলাপ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শনিবার রাত দশটায় রেল স্টেশনে চলে আসি। শত শত মানুষ দেখে মনে করেছিলাম টিকেট পাব না। টিকেট পেয়ে পরিবারের সাথে ঈদ করতে পারবো বলে এখন খুবই ভালো লাগছে।

টিকেট পেয়ে গোলাপ মিয়ার চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক
টিকেট পেয়ে গোলাপ মিয়ার চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক
গত ২২ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন স্টেশনের টিকেট কাউন্টার ছিলো ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। টিকেট পেয়ে কেউ গেছেন হাসিমুখে। আবার সারারাত জেগে টিকেট না পাওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

রোববার (২৬ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে টিকেট না পাওয়া অনেক যাত্রীর দেখাও মিললো। যারা ভোররাতে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে এসেছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের চাকরিজীবী এনামুল হক বলেন, ‘সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেসের তিনটি টিকেট কিনতে রাত তিনটার দিকে এসেছিলাম। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে উদয়ন এক্সপ্রেসে টিকেট বিক্রি শেষ। ক্ষোভ প্রকাশ করে এনামুল হক বলেন, স্টেশনে কারসাজি করে টিকেট কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়। অথচ আমরা রাতভর জেগে থেকেও টিকেট পাই না।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রেনের মোট টিকেট বিক্রি হয় ৮ হাজার ৭০৯টি। এর মধ্যে শুধু স্টেশন কাউন্টার থেকে বিক্রি হয় ৫ হাজার ২৩৩টি। বাকি টিকেটগুলো অ্যাপসের মাধ্যমে বিক্রি হয়।

তিনি আরও বলেন, যাত্রী অনুযায়ী ট্রেন এবং টিকেটের সংখ্যা কম। অনেকেই টিকেট না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। নানা অভিযোগ তোলে। এসব সত্য নয়।

এদিকে আজ ২৬ মে শেষ হয়েছে ঈদের টিকেট বিক্রি। আগামী ২৯ মে থেকে দেওয়া হবে ফেরত যাত্রীদের টিকেট।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে সূত্র জনায়, ২৯ মে দেওয়া হবে ৭ জুনের টিকেট, ৩০ ও ৩১ মে দেওয়া হবে ৮ ও ৯ জুনের টিকেট, ১ ও ২ জুন দেওয়া হবে ১০ ও ১১ জুনের টিকেট।

এসসি/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!