যানজটে ক্রেতা হারানোর শংকায় পোষাক শিল্প মালিকরা

একদিকে টানা বৃষ্টি, তারপর সড়কে তীব্র যানজট। গত দশদিনে চট্টগ্রাম বন্দর, টোল ও বিমানবন্দর সড়ক জুড়ে পরিবহনের সারি। দশ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ব্যয় হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে পণ্য পরিবহণে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি পণ্য আইসিডিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সেইসাথে এই খাতের আমদানিকৃত কাঁচামালও গন্তব্যে পৌঁছেনি।

এর ফলে পণ্য জাহাজীকরণ এবং বিদেশি ক্রেতার দেয়া নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে রপ্তানি পণ্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। এতে চট্টগ্রামের পোষাক শিল্পখাত চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে। শুধুমাত্র যানজটের কারণে দেশের রপ্তানির প্রধান খাতের আজ ঘোর দুর্দিন। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সড়কে যানচলাচল নিরবিচ্ছিন্ন করতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস ছালাম। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এ চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়,সম্প্রতি অতি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন ও বিমানবন্দর অভিমুখী সড়কে তীব্র যানজটের কারণে রপ্তানি পণ্যবাহী চালান প্রাইভেট আইসিডিসমূহে যথা সময়ে প্রেরণ করা যাচ্ছে না এবং চট্টগ্রাম বন্দর জেটি থেকে আমদানিকৃত পণ্য ডেলিভারি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিদেশি ক্রেতার নির্ধারিত লিড টাইমের মধ্যে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে রপ্তানি আদেশ বাতিলসহ স্টক লটে পরিণত হয়ে বিপুল অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

চিঠিতে বলা হয়, বিদেশি ক্রেতাগণ উল্লেখিত সমস্যার কারণে চট্টগ্রামের পোশাক শিল্প মালিকদের সাথে পূর্ব নির্ধারিত সভা বাতিল করে শাহ্ আমানত বিমান বন্দর থেকে ফিরে যাচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রামের পোশাক শিল্প মালিকগণের পক্ষে ঢাকাতে নির্ধারিত ক্রেতাদের সহিত সভায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

যানজটের কারণে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ইপিজেড এলাকার অধিকাংশ পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীরা উপস্থিত হতে না পারায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ফলে কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।

জাতীয় রপ্তানির বৃহত্তর স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন এলাকাসহ চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত বিমানবন্দরমুখী রাস্তাসমূহ যানজটমুক্ত করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়।

একই সমস্যার কারণে গত ১৯ জুন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকেও চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয় চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পণ্য খালাসে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও কন্টেইনার মুভার চলাচলে নতুন নিয়ম চালুর ফলে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় সময় ক্ষেপণে বন্দর সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। জাতীয় রপ্তানির বৃহত্তর স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন এলাকাসহ চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত বিমানবন্দরমুখী রাস্তাসমূহ যানজটমুক্ত করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ করে বিজিএমইএ।


এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!