টানা বৃষ্টিতে বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাস বন্ধ, ফের জাহাজ জটের শংকা

টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে বন্ধ আছে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল। প্রায় তিন শতাধিক জাহাজ অপারেশনাল কাজ করতে না পারার কারণে বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে অবস্থিত মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। এতে লাইটার জাহাজগুলো অলস বসে আছে, অন্যদিকে মাদারভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস না করতে পারায় প্রতিদিন বাড়ছে চার্টার ফি। জাহাজ ভেদে প্রতিদিন ১০-১৫ হাজার ডলার অতিরিক্ত চার্টার ফি বাড়ায় এর প্রভাব গিয়ে পড়বে পণ্যের খুচরা বাজারে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে এই অচলাবাস্থা সৃষ্টি হওয়ায় কবে নাগাদ পণ্য খালাস শুরু করা যাবে তাও অনিশ্চিত।

চট্টগ্রাম বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ লাইটার জাহাজ বহির্নোঙ্গর থেকে পণ্য খালাস করে আবার খালাসকৃত সেসব পণ্য লাইটারেজ জাহাজে করে দেশের বিভিন্ন গন্তেব্যে ছেড়ে যায়। টানা বর্ষণ এবং সাগর উত্তাল থাকায় কোনভাবেই জাহাজগুলো অপারেশনাল কাজে যেতে পারছে না। এতে চট্টগ্রাম বর্হিনোঙ্গরে জাহাজে জট তৈরি হচ্ছে।

বন্দর সূত্র জানায়, কন্টেইনারবাহী জাহাজগুলো চট্টগাম বন্দরের মূল জেটিতে পণ্য খালাস করে। এছাড়া খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ অন্যান্য পণ্য খালাস করা হয় বহির্নোঙ্গর থেকে।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানায়, আমদানিকৃত পণ্য বিশেষ করে খাদ্যশস্য সময়মতো খালাস করতে না পারায় বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সংকট তৈরি হবে। অন্যদিকে জাহাজে অতিরিক্ত সময় ক্ষেপণের জন্য জাহাজ ভেদে ১০-১৫ হাজার ডলার চার্টার ফির মাসুল সর্বশেষ খুচরা বাজারে গিয়ে পড়বে। এতে পণ্যের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

চট্টগ্রাম বন্দরের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, বহির্নোঙ্গরে ৪০-৪৫ জাহাজ অবস্থান করছে। আরো জাহাজ বহির্নোঙ্গরে আসছে। গত কয়েকদিন বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় জাহজের জট আরো প্রকট হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী এবং ঈদুল ফিতরে টানা ছুটির কবলে জাহাজজটের সৃষ্টি হয়েছিলো। এবারের টানা বর্ষণ চট্টগ্রাম বন্দরে বড় ধরনের জাহাজ জটের আশংকা তৈরি করেছে।

লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পদক সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পণ্য খালাস করতে যেতে পারছে না লাইটার জাহাজগুলো। সেই সাথে দেশের বিভিন্ন রুটেও বন্ধ আছে জাহাজ চলাচল। প্রায় তিন শতাধিক জাহাজ অলস বসে আছে। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়লেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর যেহেতু কারো হাত নেই সেজন্য সবাই অপেক্ষা করছে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার জন্য।

এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে জেটি থেকে কন্টেইনার খালাসেও স্থবিরতা নেমে আসে। একাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং আমদানিকারক জানান, বৃষ্টির কারণে কন্টেইনার খালাসের পরিমান কমে গেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ কতৃৃপক্ষ পণ্য এক্সামিনও বাধাগ্রস্ত হয়। জেটি থেকেও পণ্য খালাস করতে না পরায় আমদানিকারকদের গুণতে হচ্ছে জরিমানা।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক ( পরিবহন) এনামুল করিম জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য খালাস স্বাভাবিক আছে। বহির্নোঙ্গরেও পণ্য খালাস চলছে বলে দাবি করেন তিনি।

এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!