চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পৌরকর খাতে বকেয়া/হাল গৃহকর ও রেইট পরিশোধের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম। অর্থ বরাদ্দ চেয়ে গত ২৭ মার্চ গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সমন্বয়) বরাবর দাপ্তরিক পত্র দিয়েছেন গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম তৌহিদুল ইসলাম। চসিক বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বকেয়া গৃহকর পরিশোধে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে না এবং অর্থ বরাদ্দও চায় না। এ অবস্থায় গৃহকর পরিশোধে অধিদপ্তর থেকে গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের অর্থ বরাদ্দ চাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে চসিকের রাজস্ব বিভাগ।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছে পাঠানো চিঠিতে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের চাহিদা ৪৫ লাখ ৭৯ হাজার ৫৭৭ টাকা এবং গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছর পর্যন্ত বকেয়া ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৬ টাকাসহ মোট ৪ কোটি ৮০ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৩ টাকা বরাদ্দ চেয়েছে গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম। ওই চিঠিতে পৌরকর খাতে বকেয়া/হাল গৃহকর ও রেইট পরিশোধের জন্য চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়ছে।
বকেয়া গৃহকর পরিশোধে অধিদপ্তর থেকে গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের অর্থ বরাদ্দ চাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে চসিকের উপ-কর কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন চৌধুরী বুধবার (৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চসিকের পাওনা পরিশোধে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে না। তাই মন্ত্রণালয় বিষয়টি জানতে পারে না। গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ চেয়েছে, এটা ভালো উদ্যোগ। এখন বাজেটে যদি অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে চসিকের গৃহকর পরিশোধ করা সহজ হবে।’
চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্র জানা গেছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অধীনে নগরীর হোল্ডিংগুলো থেকে চসিকের গৃহকর পাওনা রয়েছে ১২ কোটি ৩১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থ বছর পর্যন্ত বকেয়া পাওনা ৯ কোটি ২৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৯ টাকা এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের হাল পাওনার পরিমাণ ৩ কোটি ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৪৩ টাকা। এ সব পাওনা পরিশোধে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিমকে দাপ্তরিক পত্র দিয়েছিলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ওই পত্রে মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও আপনার নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা/প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ এবং যথারীতি দাবি বিল জারি অব্যাহত রাখা হয়। নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়/বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ব্যতীত বকেয়াসহ হাল গৃহকর ও রেইট পরিশোধ করা সম্ভব নয় মর্মে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান জানায়।’
প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বকেয়াসহ হাল গৃহকর ও রেইট পরিশোধের জন্য সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ মঞ্জুরীর জন্য মন্ত্রীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করেন মেয়র আ জ ম নাছির।