আদালতের ‘আদেশ’ এনে ‘নিম্নমানের’ লাচ্ছা সেমাই বাজারজাতের চেষ্টা করছে ওয়েল ফুড

ভোক্তা অধিদপ্তর বিএসটিআই জানে না কিছুই

পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বলে দাবি করছে ‘ওয়েল গ্রুপ’। একইসঙ্গে ওই পণ্য বাজারজাতকরণে কোন বাধা বা নিষেধাজ্ঞা নেই বলেও দাবি করছে তারা। তবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পায়নি বলে জানা গেছে। তারা বলছেন, ‘আদালতের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত ওয়েল ফুডের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।’ ফলে সহজেই পার পাচ্ছে না ওয়েল ফুড!

বুধবার (২৯ মে) পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ওয়েল গ্রুপ বলছে, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ওয়েল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওয়েল ফুডস লিমিটেডের তৈরি/উৎপাদিত এবং বিএসটিআইয়ের মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ওয়েল ফুড ব্র্যান্ডের ‘লাচ্ছা সেমাই’ বাজারজাতকরণে কোন বাধা বা নিষেধাজ্ঞা নেই। এ বিষয়ে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’

এর আগে গত ১২ মে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় নিম্নমানের বলে প্রমাণিত হওয়ায় ওয়েল ফুড, মিঠাই, মধুবনের লাচ্ছা সেমাইসহ ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এরপর ১৫ মে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সেই ৫২টি পণ্য তিন দিনের মধ্যে এবং ১৬ মে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দুই দিনের মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দেশ দিয়েছিল।

তবে ওয়েল ফুড ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বা স্থগিতাদেশ সম্পর্কে আদালতে কোন নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিএসটিআই চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহাকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজামান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় নিম্নমানের প্রমাণিত হওয়ায় ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাইসহ ৫২টি পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারে নির্দেশ দেন আদালত। আর আদালতের নির্দেশনা বাস্তবাস্তয়ন করছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এরপর ওয়েল ফুড আমাদেরকে চিঠি দিয়ে বলেছিল, ‘‘তাদের পণ্যে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নেই।’ কিন্তু আমরা আমলে নিইনি। আদালত এবং বিএসটিআইয়ের নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ওয়েল ফুডের নিম্নমানের পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।’

ওয়েল ফুডের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আদালতের কোন নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন বিএসটিআই চট্টগ্রামের পরিচালক প্রকৌশলী মো. সেলিম রেজা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আদালত নিম্নমানের ৫২টি পণ্য যাতে উৎপাদন না হয় সে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য আবার পরীক্ষা করার জন্য নমুনা জমা দিয়েছে। ওই পরীক্ষায় ওয়েল ফুড উত্তীর্ণ হয়েছে কিনা আমি জানি না। আমাদের প্রধান অফিস থেকে এখনো এ ব্যাপার কোন নির্দেশনা আসেনি।’

এমএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!