অ্যাপে টিকিট বিপর্যয়/ ঈদযাত্রার শুরু থেকেই ট্রেন যাচ্ছে খালি!

ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সময় রেলস্টেশনগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল টিকিট প্রত্যাশীরা। রেলস্টেশনে প্রায় ১২-১৩ ঘন্টা ঘণ্টা অপেক্ষার পরও অনেকের মেলেনি কাঙ্ক্ষিত টিকিট। কিন্তু যখনই ঈদ যাত্রা শুরু হলো ট্রেনে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। বিভিন্ন ট্রেনে রয়ে যাচ্ছে শত শত খালি সিট। একই চিত্র দেখা গেছে ঈদযাত্রার প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনেও।

২ জুন রোববার সকাল সাতটায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া সুবর্ণ এক্সপ্রেসে আসন খালি ছিল ১৪৬টি। শনিবার আসন খালি তার দ্বিগুণ, শনিবার ১ জুন সুবর্ণ এক্সপ্রেসে আসন খালি ছিল ৩৪৮টি এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে আসন খালি ছিল ৩২৯ টি। এছাড়া সবকটি ট্রেনে আসন খালি ছিল গড়ে ৫০ থেকে ১০০টি।

রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কার্যালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, অ্যাপসের অধিকাংশ টিকিট অবিক্রিত থেকে গেছে। সেসব টিকিট পুনরায় কাউন্টারে বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে শনিবার রেলস্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল না। বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেসে যাত্রী ছিলো স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে বগিগুলোতে ছিল না আসনসংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী।

কলেজ শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, মেঘনা এক্সপ্রেসে চাঁদপুর হয়ে বরিশাল যাবো পরিবারের সাথে ঈদ করতে। এবার একটু আগেভাগেই যাচ্ছি। কারণ শেষ দিকে বেশি ভিড় থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ঢাকামুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। তবে এই ট্রেনের বেশিরভাগ বগিতে আসন খালি ছিল।

আশরাফুল আমিন নামে এক সিএণ্ডএফ এজেন্ট কর্মকর্তা জানান, ‘অ্যাপসের মাধ্যমে তিনটি টিকিট কেটেছিলাম। বগিতে উঠে দেখি প্রায় আসন খালি। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, স্টেশনে টিকিটের জন্য হাহাকার দেখেছি। তাহলে এতগুলো আসন খালি থাকবে কেন?’

ট্রেন ছাড়ার তিন মিনিট আগে ট্রেনের টিকিট চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মকর্তা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বলছিলেন, ‘লাইনে এত লোক টিকিটে কেটেছে, এখন দেখছি অনেক আসন খালি।’

ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে আসন খালির বিষয়ে কথা বলতে গেলে তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি। নিজেদের নাম পরিচয় দিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন তারা।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নাজিম উদ্দিন বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পরিবহন শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। শনিবার অন্যদিনের তুলনায় যাত্রী কিছুটা বেশি ছিল। রোববার থেকে রেলের শিডিউল ট্রেনের সাথে যোগ হবে চাঁদপুরগামী বিশেষ ট্রেন।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে সূত্র জানায়, বিশেষ ট্রেন ছাড়া আসনভিত্তিক টিকিট বিক্রি হয় আট হাজার ৭০৯টি। এর মধ্যে কাউন্টারে বিক্রি হয় ৫ হাজার ২৩৩টি। বাকি ৩ হাজার ৪৭৬টি টিকিট বিক্রি হয় অ্যাপসের মাধ্যমে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!