সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত 1ঢাকা প্রতিনিধি : সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। আজ রোববার ভোর চারটা ২৪ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।

সত্তরোর্ধ্ব সুরঞ্জিত রক্তে হিমোগ্লোবিন স্বল্পতায় ভুগছিলেন। শনিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে নেওয়া হয়। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

রোববার ভোর চারটা ২৪ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সকালে তাকে দেখতে গিয়ে পরিবারের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, সকাল ৯টায় তাকে জিগাতলার বাসায় নেওয়া হবে। এরপর দুপুর ঢাকেশ্বেরী মন্দিরে রাখা হবে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। বেলা তিনটায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়া হবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর মরদেহ। আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টায় তাকে সিলেটে নেওয়া হবে। ওই দিন দুপুরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর মরদেহ নেওয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই। পরে বেলা ৩টায় দিরাইয়ে তার শেষকৃত্য হওয়ার কথা রয়েছে।
রক্তে হিমোগ্লোবিন স্বল্পতাজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। এর আগে তিনি গত মে মাসে শ্বাসকষ্ট নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মাঝখানে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন তিনি।

এদিকে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সকালে তার জিগাতলার বাসভবনে যান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমেদ হোসেন, হাছান মাহমুদ, সুজিত রায় নন্দী ও জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া তার জিগাতলার বাসায় যান।

সেখানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তরুণ বয়স থেকে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। অনেকবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার মতো অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান আর দ্বিতীয়টি নেই।

সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য; স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ চার দশকের প্রায় সব সংসদেই নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি থেকে উঠে আসা বামপন্থী এই নেতা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে। প্রথম জীবনেই বামপন্থী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া সুরঞ্জিত দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম এবং দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর তিনি রেলমন্ত্রী হন। তবে সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির একটি ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেন তিনি। কিন্তু পদত্যাগপত্র গ্রহণ না হওয়ায় সেই সময় তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!