ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা ১৩ টনের ওজন স্কেল

চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলার সীমান্তবর্তী বড় দারোগার হাটের ওজন স্কেল ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা। দেশের অন্যান্য মহাসড়কের ওপর দিয়ে ওজন স্কেলে সর্বোচ্চ ১৮ থেকে ২০ টন মালামাল বহন করা গেলেও এই স্কেলের সর্বোচ্চ ওজনসীমা মাত্র ১৩ টন। এর ফলে পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

ওজন স্কেল নিয়ে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের ভোগান্তির কথা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী থেকে শুরু করে উর্ধতন কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষে আয়োজিত স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিজুল ইসলাম।

মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম ডাল মিল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম মহিউদ্দিন বলেন, এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না। দেশের অন্যান্য যে ওজন স্কেল আছে সেখানে ১৮ থেকে ২২ টন পণ্য পরিবহনের সুযোগ আছে। অথচ যে চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয় সেখানেই বিমাতাসুলভ আচরণ। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ওজন স্কেলের কারণে কম পরিমাণে পণ্য পরিবহন করতে হয়। এতে পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে যায়। অনেক আমদানিকারক এখন আর চট্টগ্রামে পণ্য বিক্রি না করে নদীপথে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পণ্য নিয়ে যাচ্ছে। এতে মুখ থুবড়ে পড়েছে খাতুনগঞ্জের সামগ্রিক ব্যবসা।

ওই সভায় একই দাবি করলেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমও। তিনি বলেন, চাক্তাই খালকে একসময় চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের দুঃখ বলা হতো। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের এখন দুঃখ হচ্ছে ১৩ টন।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী এসএম মহিউদ্দিন মাহিনের বক্তব্যেও ছিল ক্ষেভের প্রকাশ। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা ষড়যন্ত্রের শিকার। ট্রাকে ১৩ টনের বেশি পণ্য পাঠাতে পারি না। উত্তরবঙ্গে পণ্য পাঠানো যায় না।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূইয়ার সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবির সঙ্গে ওজন স্কেলের প্রসঙ্গটি তুলে ধরেছিলেন। এছাড়া অনেকগুলো সভায় ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবনায় গুরুত্বের সাথে স্থান পায় ওজন স্কেলের বিষয়টি। বছেরর পর বছর এভাবে প্রস্তাবনা রাখা হলেও স্কেলের ওজন সীমা বৃদ্ধির ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবারের (১৮ এপ্রিল) মতবিনিময় সভায় ওজন স্কেলের প্রসঙ্গটি আসতেই সভার প্রধান অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়েছিলো চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। তিনি দেশে ফিরলে হয়তো এ বিষয়ে কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যেতে পারে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!