বাস্তবায়নের পথে মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরী

বাস্তবায়নের পথে মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরী 1নিজস্ব প্রতিবেদক : মিরসরাইয়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বিসিক প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের পথে । দেশের ৭৫ তম প্রকল্পটি গ্রহণের পর থেকে নানা প্রতিবন্ধকতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন অনিশ্চয়তায় পড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখছে প্রকল্পটি। ইতিমধ্যে প্রকল্পের কাজ শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করেন প্রকল্প কর্মকর্তা কৃষ্ণ আচার্য্য। প্রকল্পটিতে শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালের দিকে তৎকালীন সরকারের শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দ্যেশে মিরসরাইয়ে বিসিক শিল্প নগরী বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। পরবর্তী মিরসরাই পৌরসভার পূর্ব মঘাদিয়া মৌজায় তালবাড়িয়া রেলস্টেশন এলাকায় জায়গা নির্ধারণ করে ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে। প্রকল্পের জন্য ১৫.৩২ একর জমির অধিগ্রহণ করে মাটি ভরাট কাজও শুরু করা হয়। প্রথম অবস্থায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। পরে তা বাড়িয়ে ২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা করা হয়। ২০১৩ সালের শেষ দিকে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু কৃষি জমিতে শিল্পনগরী স্থাপনের বিষয়ে দ্বিমত পোষন করেন মিরসরাইয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য, বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ফলে থমকে যায় শিল্প নগরীর মাটি ভরাট কাজসহ অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ। পরবর্তী ২০১৫ সালের মে মাসে একনেকের বৈঠকে অধিগ্রহণ জমিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু নিদিষ্ট মেয়াদের মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন শুরু করলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ৮৮টি শিল্প প্লট তৈরি করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়ার কথা রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকল্পে প্রবেশের পশ্চিম মুখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর একটি ও প্রকল্পের উত্তর পাশে স্টেশন সড়কে একটি গেইট করা হয়েছে। প্রকল্পের ভেতরে সড়ক কার্পেটিং ও ড্রেনেজ কাজ শেষ করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে প্লটের সীমানা। প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতার কাজ শেষে টানা হচ্ছে বিদ্যুতের তার। এসময় প্রকল্প এলাকায় ঘুরে যাওয়া স্থানীয় ব্যবসায়ী ওয়াজিউল্ল্যা বলেন, বিসিক প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। এটি মিরসরাইয়ের উন্নয়নের জন্য একটি ভালো দিক।

সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–ৃয়া বিসিক সম্পর্কে বলেন, এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত, রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার কথা চিন্তা করে মিরসরাইয়ের তালবাড়িয়া এলাকায় বিসিক শিল্প নগরী তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে এটি সময়মতো বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেরিতে হলেও এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে দেখে তিনি খুশি হয়েছেন। এতে মিরসরাইয়ের মানুষেরই উপকার হবে।

মিরসরাই বিসিক প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা কৃষ্ণ আচার্য্য জানান, মিরসরাই বিসিকের কাজ গত জুন মাসে শতভাগ শেষ হয়েছে। মোট ব্যয় থেকে আরো ৫ লাখ টাকা কম ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনের কাজ শেষ হলেও নিরাপত্তা প্রহরী সংকটের কারণে বিদ্যুতিক ট্রান্সফরমার লাগানো হচ্ছে না। প্লট বরাদ্দ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দ নিয়ে এখনো অফিসিয়ালি কোন সিদ্ধান নেওয়া হয়নি। তবে শিল্প নগরীটি শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে হস্তান্তরের ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!