কাস্টম জটিলতায় পণ্য ছাড়করণে বিলম্ব, পিছিয়ে পড়ছে পোশাক শিল্প

কাস্টম জটিলতায় পণ্য ছাড়করণে বিলম্বের কারণে পোশাক শিল্প পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম। বৃহষ্পতিবার (২৭ জুন) বিকালে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সম্মেলন কক্ষে নব-নিযুক্ত কমিশনার মো. ফখরুল আলমের সাথে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএর নেতৃবৃন্দের এক মত বিনিময় সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

মোহাম্মদ আবদুস সালাম আরো বলেন, ‘পোশাক শিল্প বর্তমানে কঠিন সময় অতিক্রম করছে। আর্ন্তজাতিক বাজারে অব্যাহতভাবে পণ্যের দরপতন অন্যদিকে বিদেশি ক্রেতার পরিদর্শন সংস্থা অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সংস্কার কর্মসূচি প্রতিপালন, শ্রমিকদের মজুরি ৫১ শতাংশ বৃদ্ধিসহ নানা অবকাঠামোগত সমস্যায় ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। এমনিতেই লিডটাইম বা উৎপাদন সময়ের জন্য আমরা প্রতিযোগী অন্যান্য দেশ থেকে পিছিয়ে আছি। এর উপর নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রপ্তানিতে ব্যর্থ হয়ে স্টকলটসহ অর্ডার বাতিলের কারণে রুগ্ন শিল্পে পরিণত প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে উদ্যোক্তারা।’

সভায় আমদানিকৃত মালামাল ছাড়করণে কাস্টমস কর্তৃক কাপড় রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পরীক্ষণ, ফার্স্ট অ্যাপ্রেইসমেন্ট প্রদান, এআইআর কর্তৃক বিআইএন লক/চালান আটক , ফ্রি অফ কস্ট চালান ছাড়করণে দীর্ঘসূত্রিতা, কম্পোজিট প্রতিষ্ঠানের কেমিক্যাল ছাড়করণে অনীহা ও বিভিন্ন জটিলতায় প্রচুর সময়ক্ষেপণসহ হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আবদুস সালাম।

তিনি বলেন, ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেসে বিশ্বে ১৯০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম। এ অবস্থা উন্নীতকরণে বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে আমদানি কার্যক্রম সম্পাদন চারদিন ও রপ্তানি সম্পাদনে ৩৬ ঘণ্টা নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কাস্টম হাউজে বর্তমান জটিলতার ফলে রপ্তানিতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়ে পোশাক শিল্প পিছিয়ে পড়ছে।’

সভায় পোশাক শিল্পের আমদানিকৃত পণ্য চালান ছাড়করণে বিরাজমান সমস্যাসমূহ দ্রুত সমাধানের জন্য কমিশনারকে অনুরোধ করেন এবং সংশ্লিষ্ট সকল স্টক হোল্ডারদের নিয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন।
সভায় চট্টগ্রাম কাস্টমস্ হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম পোশাক শিল্পের রপ্তানিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে কাস্টম কার্যক্রম সহজীকরণ পূর্বক আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া তরান্বিত করার আশ্বাস দেন। তিনি পোশাক শিল্পের আমদানিকৃত চালান দ্রুত ছাড়করণে বিদ্যমান জটিলতা দ্রুত নিরসন করাসহ একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হবে বলেও আশ্বাস দেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘সৎ ব্যবসায়ীদেরকে উৎসাহ প্রদান, ব্যবসা-বান্ধব কাস্টম হাউজে তৈরিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।’

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি এএম চৌধুরী সেলিম, পরিচালক জনাব এএম মাহাবুব চৌধুরী, প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, নাসিরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রাক্তন পরিচালক এমডি এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাইফ উল্লাহ মনছুর, সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম. আকতার হোসেন প্রমুখ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ছিলেন চট্টগ্রাম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার-১ মোহাম্মদ আকবর হোসেন, অতিরিক্ত কমিশনার-২ কাজী মুহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, যুগ্ম কমিশনার-২ সাধন কুমার কুন্ডু প্রমুখ।

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!