সাতই মার্চের ভাষণ নিয়ে চলচ্চিত্র

১৯৭১ সালের অনিশ্চয়তা ভরা দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণ উদ্দীপ্ত করে তুলেছিল পূর্ব বাংলার মানুষকে। দিয়েছিল বিপৎসংকুল পথে এগিয়ে যাওয়ার পথরেখা। প্রতিবছর এই দিনটি ফিরে আসে এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা আর মুক্তির অফুরান আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে। বঙ্গবন্ধুর সেই অমর ভাষণ এখন বিশ্বের সবার।

২০১৭ সালের অক্টোবরে ইউনেসকো এই ভাষণকে দিয়েছে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে এক অনন্য স্বীকৃতি। সাতই মার্চের সেই ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে চলচ্চিত্র বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সোহেল রানা বয়াতি। নাম ‘তর্জনী’। এই ছবির কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। আগামীকাল মহান স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষে শুটিং শুরুর আগে সিনেমার ফার্স্ট লুক হিসেবে একটি পোস্টার প্রকাশ করছে ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শিমুল খান মোশন পিকচার্স।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে কেমন প্রভাব ফেলছে, তা এই সিনেমায় তুলে ধরবেন পরিচালক সোহেল রানা। চিত্রনাট্য লেখার কাজ শুরু হয়েছে দুই বছর আগে। এই সিনেমায় ১৯৭১, ১৯৭৫ এবং ২০১৭—এই তিনটা সময়কে দেখানো হবে। এই সিনেমার জন্য কয়েকজন অভিনয়শিল্পীকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। শুটিং শুরুর আগে পরিচালক সিনেমা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য ফার্স্ট লুক হিসেবে পোস্টার প্রকাশ করেছেন।

প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে আজ সোমবার দুপুরে পরিচালক সোহেল রানা বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের আমরা যাঁরা আছি, এখন ভিজ্যুয়াল অনেক কিছুই দেখতে চাই। আমার মনে হয়েছে, এই বিষয় নিয়ে তো চমৎকার কাজ করা যায়। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ তো কোনো ব্যক্তি কিংবা দলের নয়, এটি সবার। দেশের জন্য এই ভাষণ সব সময়ই সমসাময়িক ও প্রাসঙ্গিক।’

সাতই মার্চের ভাষণ নিয়ে চলচ্চিত্র 1সাতই মার্চের ভাষণ নিয়ে সিনেমা নির্মাণের ভাবনা প্রসঙ্গে সোহেল রানা বলেন, ‘দুই বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে বসে আড্ডা দিচ্ছি। পরদিন ছিল ৭ মার্চ। তখন মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা হচ্ছিল। ভাবলাম, এই যে ভাষণটা শুনছি, নির্দিষ্ট দিনের পর আর সেভাবে শোনা হয় না। শুধু তা-ই নয়, এই ভাষণের দর্শনটা আমরা তরুণেরা হয়তো সেভাবে উপলব্ধিও করছি না। আমি মনে করি, এই ভাষণ একদিন আজকের বাংলাদেশ গঠনের ব্যাপারটি ত্বরান্বিত করেছিল। তখনই সিনেমা বানানোর সিদ্ধান্ত নিই।’

সোহেল রানা বলেন, ‘“তর্জনী” চলচ্চিত্রে সাতই মার্চের ভাষণের প্রভাব তিন সময়ের মানুষের মধ্য দিয়ে দেখা যাবে। আমি নিজেও একজন তরুণ পরিচালক, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আমার ভেতরে কী উপলব্ধি এনেছে, সেটাই দেখাব।’

শুরুতে শোনা গিয়েছিল, ‘তর্জনী’ চলচ্চিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবে টোকাই নাট্যদলের আপন। কিন্তু এই চরিত্রের জন্য এখন অন্য অভিনয়শিল্পী খুঁজছেন পরিচালক। তবে ১৯৭১ সাল ও ১৯৭৫ সালের সময়ের দুটি প্রধান চরিত্র চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলে জানান সোহেল রানা। এই দুই সময়ের প্রেক্ষাপটে অভিনয় করবেন আশীষ খন্দকার ও শিমুল খান।

‘তর্জনী’ সিনেমার শুটিং ভোলা, সিলেট ও ঢাকায় করার পরিকল্পনা পরিচালকের। এই পরিচালক কিছুদিন আগে ‘জল ও পানি’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ‘তর্জনী’ সিনেমার গল্প যৌথভাবে লিখেছেন সোহেল রানা বয়াতি এবং শাহাদাত রাসেল। আর চিত্রনাট্য লিখছেন শাহাদাত রাসেল। ২০২০ সালের ৭ মার্চ দেশে এবং দেশের বাইরে ‘তর্জনী’ মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!