দূরদেশে দেশীয় সংস্কৃতিতে দর্শক মাতাচ্ছেন রাউজানের ক্ষুদে নৃত্য শিল্পী মেঘা বড়ুয়া

রাউজান প্রতিনিধি :

ক্ষুদে নৃত্য শিল্পী মেঘা বড়–য়া। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের অঙ্কুর ঘোনা গ্রামের বড়–য়া পাড়া এলাকার কুয়েত প্রবাসী অশোক বড়–য়া ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিককর্মী উর্মি বড়–য়ার আদুরে কন্যা। অশোক বড়–য়া বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি কুয়েত শাখার সভাপতি।

 

raozan-ctg-pic-mega3
আশোক-উর্মি দম্পতির চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে মেঘা কুয়েতের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঘুঙুরের রিনি ঝিনিতে ইন্দ্রজাল তৈরি করে দর্শক মাতিয়ে চলছে প্রতিনিয়ত। তার নৃত্যে মুগ্ধ হয়ে দর্শকদের করতালিতে মুখরিত হয় অডিটরিয়াম।

 
২০০৮ সালের ১৫ জুলাই আশোক ও উর্মির ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় মেঘা। জন্মের পরই মেঘা বাবা-মায়ের সাথে তেল সমৃদ্ধ মধ্য প্রাচ্যের দেশে কুয়েতে পাড়ি জমান। আশোক-উর্মি দম্পতির এক পুত্র এক কন্যার মধ্যে মেঘা ছোট। সে বর্তমানে কুয়েতস্থ ইন্ডিয়ান সেন্ট্রাল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
জীবিকার তাগিদে দেশীয় সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপরীত একটি দেশে অবস্থান করলেও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মী উর্মি বড়–য়া স্বপ্ন ছিল তার আদুরে কন্যা মেঘাকে নৃত্য শিল্পী হিসেবে গড়ে তুলবেন।

 

এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আশোক-উর্মি দম্পতি তাদের আদুরে কন্যা মেঘাকে নিয়ে শরণাপন্ন হন কুয়েতে অবস্থানরত ভারতের বিখ্যাত নৃত্য শিল্পী তানিমা দাস গুপ্তার কাছে। তানিমা দাশের নিকট হতে মেঘা নিয়মিত রপ্ত করে চলেছেন নৃত্যর নিত্য নতুন কলা কৌশল। মেঘা তার মায়ের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে ইতোমধ্যে কুয়েতে দেশীয় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নন্দিত ক্ষুদে নৃত্য শিল্পি পরিচিত লাভ করেন।

 
গত ২৫ শে নভেম্বর ২০১৬ বিজয় উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে কুয়েতের খাইতান নামক স্থানে কারমেল স্কুল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় মেঘা বড়ুয়া একক ও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। এসময় হাজারো দর্শকের করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে স্কুলের অডিটোরিয়াম। এই অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কুয়েতে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম। এছাড়াও কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে মেঘা বড়–য়া নিয়মিতভাবে একক ও দলীয় নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে মুগ্ধ করছেন প্রবাসীদের। প্রবাসীরা দূরদেশে থেকেও পাচ্ছেন দেশীয় সংস্কৃতির আমেজ।

 
সম্প্রতি কুয়েতে অবস্থানরত রাউজানের সাংস্কৃতিককর্মী সুমন রাজ বড়–য়ার মাধ্যমে কথা হয় এই ক্ষুদে নৃত্য শিল্পি মেঘা বড়–য়ার সাথে। সে জানান, দেশাত্ববোধক সংগীত, রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীতে তার নৃত্য করতে বেশ ভাল লাগে। হাজারো দর্শকের সামনে নৃত্য করতে প্রথমে একটু ভয় হয়; যখন সবাই করতালি দেয় তখন ভাল লাগে। মেঘা বলেন, নৃত্যকে আমি উপভোগ করি। নৃত্য আমার সাধনা।

 
মেয়ের দর্শকপ্রিয়তায় গর্বিত মেঘার বাবা-মা। মেয়ে মেঘার জন্য দেশ বিদেশের সকল বাঙ্গালীর নিকট আর্শীবাদ কামনা করছেন মেঘার বাবা-মা।
দেশের বাইরে ভিন্ন পরিবেশে, ভিন্ন সংস্কৃতির মাঝে জীবন অতিবাহিত করলেও অন্তরে দেশপ্রেম থাকলে দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করা যায়। ক্ষুদে নৃত্য শিল্পি মেঘার মাধ্যমে এমনি প্রমাণ দিলেন মেঘার বাবা-মা। প্রবাসের মাটিতে দেশীয় সংস্কৃতিতে মেঘার নান্দনিক নৃত্য প্রবাসীদের দেশপ্রেমের বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে জাগ্রত করে তোলে।

 

জয়নাল আবেদীন, রাউজান (চট্টগ্রাম):

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!