স্ক্র্যাপের আড়ালে চলছিল কর্ণফুলী পেপার মিলের যন্ত্রাংশ পাচার!

কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলে (কেপিএম) থেকে রাতের আঁধারে পুরাতন স্ক্র্যাপের আড়ালে কয়েক লাখ টাকার নতুন যন্ত্রাংশ পাচারের সময় তিনটি ট্রাককে আটক করেছে স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের উপর ক্ষিপ্ত হলে তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবি। তিনি বলেন, ‌‘চট্টগ্রামের সাগরিকার মেসার্স ইকবাল এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান ক্র্যাপ যন্ত্রাংশ ক্রয়ের নামে কেপিএমের সাথে আঁতাত করে লাখ লাখ টাকার যন্ত্রাংশ পাচারের খবর পেয়ে আমরা চট্টগ্রামমুখী তিনটি ট্রাককে কেপিএমের মূল ফটকে গতিরোধ করি। ট্রাকগুলোর ভেতরে দেখি স্ক্র্যাপ যন্ত্রাংশের পাশে নতুন যন্ত্রাংশ।’

কাপ্তাই থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. খলিল বলেন, ‌‘মালামাল গ্রহীতা গেইটপাস ছাড়া গাড়ি ভর্তি মালামালের বৈধ কোনো কাগজপত্র তাৎক্ষণিক দেখাতে পারেনি। এ সময় স্থানীয় জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের উপর চড়াও হলে ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকভর্তি মালামাল উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসি।’

ঘটনার পর চন্দ্রঘোনা ইউপি কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় স্থানীয় প্রশাসন ও কেপিএম ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তক্রমে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা সদরে উপস্থিত হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল সাড়ে ৫টা) কোনো বৈধ কাগজপত্রই দেখাতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবি।

কেপিএমের ব্যবস্থাপক আহসান আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘ট্রাকভর্তি আটক মালামালের বিসিআইসির বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াও বৈধ উপায় অবলম্বন করে করা হয়েছে।’

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল বলেন, ‘কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে মালবাহী তিনটি ট্রাক আটক করে স্থানীয় জনতা। যেখানে চকচকে নতুন প্যাকেটকৃত লোহার ব্লেড ও মালামাল রয়েছে। এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে নেন। এ সময় পুলিশের কাছে উপস্থাপনকৃত কাগজপত্রে বিসিআইসি’র অনুমোদিত কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি কেপিএম কর্তৃপক্ষ।’

কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক বলেন, ‘বিসিআইসির বোর্ড সভার অনুমোদন ছাড়া এমন কাজ (স্ক্র্যাপ বিক্রয়) যদি কেপিএম কর্তৃপক্ষ করে থাকে, তাহলে আমি এটাকে চুরি বলবো। আমার মনে হয় উচ্চপর্যায়ের একটি মহল কেপিএমের এমডিকে এ ঘটনা থেকে বাঁচাতে চেষ্টা চালাচ্ছে।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!