শাহ আমানতে কার্গো পণ্য খালাস বন্ধে বিপাকে প্রবাসী ও সিএন্ডএফ এজেন্ট

0

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বিমানবন্দরে কার্গো পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে দুয়েকদিন পণ্য খালাস হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে পুরোপুরি বন্ধ আছে পণ্য খালাস। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ না বললেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে এক সপ্তাহ থেকে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ। এর ফলে পণ্য খালাসে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিমানবন্দরের কার্গো হল থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাসের ঘটনায় তদন্ত চলার কারণে পণ্য খালাস বন্ধ আছে বলে জানায় সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে সিএন্ডএফ এজেন্টসহ পণ্যের মালিক প্রবাসীরা। পণ্য খালাস করতে না পরায় বিমানবন্দরের ওয়্যার হাউজের জরিমানা গুনতে হচ্ছে সিএন্ডএফ এজেন্টদের।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কর্মরত একটি সিএন্ডএফ এজেন্টের স্বত্ত্বাধিকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বিমানবন্দরে কার্গো জালিয়াতির ঘটনায় কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি জড়িত থাকলে তার দায়ভার কেন পণ্য প্রবাসী, কিংবা সিএন্ডএফ এজেন্টদের নিতে হবে। পণ্য খালাস বন্ধ থাকার কারণে পণ্যের মালিকরা আমাদের প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে ওয়্যার হাউজে পণ্য পড়ে থাকার কারণে আমাদের গুনতে হচ্ছে জরিমানা। এতে সিএন্ডএফ এজেন্টরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে বিমানবন্দরের কার্গো হলে খালাসের অপেক্ষায় ১৫০ টন পণ্য পড়ে আছে বলে জানান তিনি।

s alam president – mobile

একাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট জানায়, কার্গো পণ্য খালাস বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আসা বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি কার্গো ফ্লাইটও বাতিল হয়ে গেছে। সোমবার (২৫ জুন) ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজের একটি কার্গো ফ্লাইট বাতিল হয়। মঙ্গলবার (২৬ জুন) একই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে মাত্র ১০ পণ্য আসে বিমানবন্দরে। অথচ অন্য সময়ে তার ৮ থেকে ১০ গুণ পণ্য আসে একটি কার্গো ফ্লাইটে। পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা বন্ধ করে দিচ্ছেন বিদেশ থেকে পণ্য পাঠানো।

সিএন্ডএফ এজেন্টরা আরো জানায়, পণ্য খালাস বন্ধ থাকার বিরুপ প্রভাব পড়ছে। কার্গো ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাওয়ায় পুরনায় স্বাভাবিক হওয়া নিয়ে আশংকা তৈরি হয়েছে সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং প্রবাসীদের মধ্যে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক কাজী খায়রুল কবির জানান, যতটুকু জেনেছি শুল্ক পরিশোধ ছাড়া কার্গো পণ্য খালাসের ঘটনায় তদন্ত চলছে। সেজন্য কার্গো পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। রোববারের (৩০ জুন) মধ্যে পণ্য খালাস শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, কার্গো পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ তা সঠিক নয়। কাগজপত্র সঠিক থাকলে পণ্য খালাসের নির্দেশনা দেওয়া আছে।

Yakub Group

প্রসঙ্গত: চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কার্গো হল থেকে সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজ জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক পরিশোধ ছাড়া পণ্য খালাস করে। বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চলে যাওয়ায় তদন্তে নামে কাস্টম হাউজ। প্রাথমিক পর্যায়ে কাস্টমসের এয়ারপোর্ট এন্ড এয়ারফ্রেইট শাখার কর্মকর্তাদের দিয়ে তদন্ত করা হয়।

সেই তদন্তে ওয়াটারওয়েজের বিরুদ্ধ ১২ চালানে জালিয়াতির তথ্য ধরা পড়ে। আরো অধিকতর তদন্তের জন্য ১২ জুন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রধান করা হয় অতিরিক্ত কমিশনার-২ কাজী মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে। ইতোমধ্যে তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। রবি কিংবা সোমবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হবে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে। ওই তদন্তে জালিয়াতির মাধ্যামে বিমানবন্দরের কার্গো হল থেকে পণ্য খালাসের সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে।


এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!